পটাশপুর: শ্বশুরের কুপ্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছিল বৌমা। তারই জেরে বধূরে নৃশংসভাবে কেরোসিন তেল ঢেলে বাড়ির মধ্যে বন্দি রেখে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ উঠল শ্বশুর বাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে। গৃহবধূর বাপের বাড়ির অভিযোগে ভিত্তিতে মৃতার স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় পটাশপুর থানার শুকখোলা গ্রামে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত স্বামীর নাম নির্মল মাইতি। শনিবার ধৃতকে কাঁথি আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন নাকচ করে পুলিশির হেফাজতের নির্দেশ দেন। যদিও ঘটনার শ্বশুর সহ বাকি অভিয়ুক্তরা পলাতক রয়েছে। এই ঘটনায় আগেই নিহত বধূর দুই জা রিনা মাইতি ও লতিকা মাইতিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তারা এখন জেল হাজতে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৯ জুলাই সন্ধ্যায় গৃহবধূর চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে আসে। খবর দেওয়া হয় পটাশপুর থানার পুলিশকে। এরপর বাড়ি থেকে অগ্নিদদ্ধা অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ। ততক্ষনে শ্বশুর সহ বাড়ির অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়৷ খবর পেয়ে পুলিশ ওই বধূর অগ্নিদগ্ধ দেহ স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা গৃহবধু সুমিতা মাইতিকে (২৩) মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃত বধূর বাবা শ্রীমন্ত দাস লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জামাই সহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ এনে কঠোর শাস্তির দাবি জানান৷
এরপরই তদন্তে নেমে একে একে নিহত বধূর দুই জা এবং স্বামীকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ পটাশপুর থানার ওসি দীপক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে৷ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে৷’’ চার বছর আগে ভূপতিনগর থানার ধাইপুকুরিয়া গ্রামের শ্রীমন্ত দাসের মেয়ে সুমিতার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পটাশপুর থানার শুকখোলা গ্রামের নির্মল মাইতির। বিয়ের পর তাদের একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহন করে। সুমিতার স্বামী কর্মসূত্রে চেন্নাইয়ের হোটেলে কাজ করে। সেই সুযোগে শ্বশুর বৌমাকে কুপ্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ। তাতে রাজি না হওয়ায় শুরু হয় অত্যাচার। এমনকি এবিষয়ে স্বামীকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে অভিযোগ৷ বিষয়টি নিয়ে গ্রামে সালিশি সভাও বসেছিল৷ তারপরও শ্বশুর বধূকে নানাভাবে উত্যক্ত করতেন বলে অভিযোগ৷