পুজো প্যান্ডেলে No-Entry: মমতা যা করতে পারতেন না, হাইকোর্ট তা করে দেখাল!

পুজো প্যান্ডেলে No-Entry: মমতা যা করতে পারতেন না, হাইকোর্ট তা করে দেখাল!

দেবময় ঘোষ: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে যা করতে পারছিলেন না তা কলকাতা হাইকোর্ট করে দেখিয়েছে। কিন্তু, এতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তার সরকারের সুবিধাই হল। নিজে হাতে দুর্গা পুজোর উপর কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না মমতা। লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই ‘হিন্দু ভাবাবেগ’ মমতাকে একটু বেশি ভাবায়। তার উপর বিধানসভা ভোটের আগে ‘আত্মঘাতী বাঙালি’র পুজোর উল্লাসে ‘ফুলস্টপ’ দিতে গেলে ভোটযন্ত্রের সফটওয়ার চাপ পড়তে পারত। সেদিক থেকে ভাবলে, হাইকোর্টকে ধন্যবাদ দেবে পুলিশ, প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, হাসপাতালও। পুজোর পর অতিমারী যে ভয়ঙ্কর রূপ নিতে চলেছিল, তার সরাসরি চাপ তো পুলিশ, স্বাস্থ্য, হাসপাতালের উপরেই পড়ত। ২১-এর বিধানসভা নির্বাচন এই সরকারের গলায় কাঁটার মত আটকে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খুব সহজে এই সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন না।

২০১৮ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা দুর্গাপুজো ক্লাবগুলির জন্য ১০ হাজার টাকা ঘোষণা করেছিলেন, যা ২০১৯ সালে বেড়ে হয় ২৫০০০ টাকা। তা, এবছর ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ২০১৮ সালেই সরকারের এই সিদ্ধান্ত হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় সম্প্রদায়কে খুশি করার চেষ্টায় মমতার সরকার সচেষ্ট হয় তখন, যখন তার এবং তার সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু বিরোধী তকমা সাঁটা শুরু হয়। রাজ্য ৩২ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটারের সিংহভাগ মমতার প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছে। ইমাম, মোয়াজ্জেম ভাতা বিতর্ক তুলেছে। প্রধান বিরোধী ( বিধানসভায় সংখ্যার বিচারে না হলেও) বিজেপি মমতার সংখ্যালঘু-প্রীতিকে তোষণের তকমা দিয়েছে। রাজনীতির ময়দানে এই রণনীতি নিয়ে রাজ্যের ভোটকে ধর্মীয় মেরুকরণের বিচারে ভাগ করতে অনেকখানি সফল হয়েছে বিজেপি।

মমতা জানেন হিন্দু বাঙালি পরিবারে দুর্গা পুজোর গুরুত্ব কতটা বেশি। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ সরকারের একটি সিদ্ধান্ত রাজ্য বিজেপিকে পুজো রাজনীতিতে অনেকটা পিছনে ফেলে দিয়েছে।  উত্তরপ্রদেশে বারোয়ারি পুজো বন্ধ করে দিয়েছে যোগী সরকার। পুজো করা যাবে বাড়িতে।  এদিকে দশেরা রামলীলার জন্য রয়েছে অনুমতি। মমতা এই সুযোগটি ছাড়বেন কেন। বিজেপি যে বাঙালি বিরোধী তা তিনি অনেকদিন ধরেই প্রমাণ করতে চাইছিলেন। সে সুযোগ তিনি পেয়েছেন পুরোপুরি। এমনকি বিজেপির সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত যোগী সরকারের এই সিদ্ধান্ত বিরোধীতা করেছেন।  ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অফিস। পুজোয় বাঙালিদের জন্য বিশেষ বার্তা দেবেন প্রধান নরেন্দ্র মোদী।  কলকাতা ভার্চুয়াল পুজো উদ্বোধনও করতে পারেন তিনি। রাজনীতির ময়দানে বিজেপি নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে করোনা-ই যেন মহিষাসুর হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আপাতত, সে অসুর বধ হয়েছে আদালতের হাতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 − 10 =