কলকাতা: ফের রাজ্যের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন বাংলা সাংবিধানিক প্রধান জগদীপ ধনকর৷ রাজ্যের বিরুদ্ধে সংঘাত বাড়িয়ে গণবণ্টন ব্যবস্থা থেকে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতিপূরণ ও শিল্প বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর থেকে তথ্য চেয়ে টুইট করেছেন রাজ্যপাল৷ রাজ্যপালের চ্যালেঞ্জ গ্রহক করে কেন জবাব দিচ্ছেন না মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন বামেদের৷ পাল্টা রাজ্যপালকে বিজেপির কর্মী বলে কটাক্ষ তৃণমূল সাংসদের৷
আজ রাজ্যে বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে রাজ্যপাল টুইটে লিখেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে বলছি, রাজ্যের রাজনৈতিক হিংসা, শিল্প সম্মেলন, গণবণ্টন ব্যবস্থা, আমফানে ক্ষতিপূরণ নিয়ে সমস্ত তথ্য জানার অধিকার রয়েছে রাজ্যপালের৷ এটাই আমার কর্তব্য রাজ্যপাল হিসেবে৷ এই সব তথ্য দেওয়া হচ্ছে না৷ শাসকদলের দাবি, রাজ্যপাল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কাজ করে চলেছেন৷ এটাই কি আইনের শাসন? গণতন্ত্র? কেন তথ্য দেওয়া হচ্ছে না? কী গোপন করতে চাইছে রাজ্য? এই বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হোক৷বিশ্বাসযোগ্যতা ও স্বচ্ছতা বজায় রাখা মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব৷ তথ্য না দেওয়ার জন্য কে দায়ী, তাকে খুঁজে বার করা প্রয়োজন রয়েছে৷ অস্বচ্ছতা কেলেঙ্কারির জন্ম দেয়৷’’
রাজনৈতিক হিংসা,শিল্প সম্মেলনে দুর্নীতি,রেশন ব্যবস্থা, আমফানের ত্রাণ বিলিতে অনিয়ম সহ বিবিধ বিষয়ে @MamataOfficial এর রিপোর্ট চাওয়া রাজ্যপালের অধিকার ও কর্তব্য।সেই তথ্য পাওয়া যায় না।শাসক দলের অবস্থান হল, রাজ্যপাল রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। আমার প্রশ্ন, এটা কি আইনের শাসন বা গণতন্ত্র
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) August 2, 2020
রাজ্যপালকে তথ্য না দেওয়ার ব্যর্থতা @MamataOfficial এর আমলে তথ্যের অধিকারের করুণ অবস্থার পরিচায়ক। মুখ্য তথ্য কমিশনারকে ডেকে আগেই সতর্ক করেছি। তথ্য চেয়ে আবেদন করলেই এ রাজ্যে বাড়িতে পুলিশ যায়। ভয় দেখানো হয়। তাই এত কম আবেদন জমা হয়। দুর্নীতি রোধে তথ্য প্রকাশ সবচেয়ে জরুরি।
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) August 2, 2020
রাজ্যপালের এই টুইট ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর৷ স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছে তৃণমূল৷ সমর্থন জানিয়েছে বিরোধী শিবির৷ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘‘আমি রাজ্যপালকে বলছি, সাংবিধানিক জ্ঞান রাজ্যপালের নেই৷ যদিও তিনি বরিষ্ঠ আইনজীবী৷ রাজ্যপাল কতটা হস্তক্ষেপ করতে পারে, কতটা করতে পারে না, সেটাও রাজ্যপাল আগে শিখুক৷ জানুক৷ মুশকিল হচ্ছে, রাজ্যপাল এখন বিজেপির সদর দফতরে কর্মচারীতে পরিণত হয়েছেন৷ রাজ্যপাল আপনার তো অনেক বয়স হয়েছে৷’’
অন্যদিকে রাজ্যপালকে সমর্থন জানিয়েছেন বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী ও রাজ্যসভার সাংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য৷ সুজন জানিয়েছেন, ‘‘গোটা রাজ্যের মানুষ ত্রাণ নিয়ে প্রশ্ন করছেন৷ আজ রাজ্যপালকে সেই কথা কেন বলতে হল? শিল্প সম্মেলন করে কত টাকার বিনিয়োগ এসেছে, শিল্প সম্মেলন করার খরচের থেকেও কি বেশি টাকার বিনিয়োগ বাংলায়? আমরা জানতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বিধানসভায় কোন উত্তর দেওয়া হয়নি৷ রাজ্যে নতুন কোন শিল্প নেই৷ এই প্রশ্নটা যদি রাজ্যপাল করে থাকেন, তাহলে রাজ্য সরকার কেন তার উত্তর দিচ্ছে না? তাহলে মানুষের জানার সুযোগ থাকবে৷’’
সংসদ বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, ‘‘অনেকদিন পর রাজ্যপাল সঠিক প্রশ্ন করেছেন৷ সাধারণত এতদিন ধরে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রীর বিবাদ চলছিল, তা অবাঞ্চিত৷ আমরা বারবার বলেছি, তৃণমূল সরকার পুরোপুরি দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছে৷ একটা কর্মসূচি হয় না, যেখানে দুর্নীতি হয় না৷ রাজ্যপালকে অনুরোধ করবো, মুখ্যমন্ত্রীকে বলব, রাজ্যপালের এই চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করুন, আপনার সততা প্রমাণের জন্য৷ সমস্ত তথ্য মানুষের কাছে দিন৷ তা না হলে আমরা বলব, আপনি চোর৷ আমরা বলতে বাধ্য হব৷’’