মছলন্দপুর: চারতলা বাড়ি সম্পূর্ণ অক্ষত রেখে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সরানো হচ্ছে ২৬ ফুট পেছনে, আর তাই দেখতে ভিড় করেছেন কৌতুহলী জনতা। দ্রুত মছলন্দপুর-তেঁতুলিয়া রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করা হবে, তার নোটিশ পৌঁছে গেল সরকারি জায়গা দখল করে রাখা সকল ব্যবসায়ীদের এবং বিভিন্ন বাড়ির মালিকের কাছে।আর তার জন্য চারতলা আস্ত বাড়ি সরানো হচ্ছে ২৬ ফুট দূরে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,বাড়ির মালিকের নাম নির্মল কর্মকার।তেঁতুলিয়া রোডের উপরে তাঁর বাড়ি ও সোনার দোকান এই বিল্ডিংয়ে।সম্প্রতি ওই রাজ্য সড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়েছে।তাতে রাস্তার বেশ খানিকটা তাঁর বাড়ির মধ্যে পড়ে গিয়েছে।দোকান ও বাড়ি ভেঙে ফেলার সরকারি নির্দেশের চিঠিও নির্মলবাবুর বাড়িতে চলে এসেছে।অনেক স্বপ্ন নিয়ে তৈরি চারতলা শখের অত বড় বাড়িটা শেষ পর্যন্ত ভেঙে ফেলতে হবে? নির্মলবাবুর মাথায় নানা চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে।কি হবে ভবিষ্যতে নির্মল বাবুর পরিবারের।কোথায় থাকবে পরিবার নিয়ে চিন্তায় দুচোখের পাতা এক করতে পারছিলেন না বেশ কিছুদিন।পরিচিত এবং আত্মীয় পরিজনদের জানিয়েও কোন রকম সুরাহা মেলেনি তার। অবশেষে তিনি নিজেই ইউটিউব থেকে বাড়ি সরানোর সংস্থার সন্ধান পান।কথায় আছে কথায় আছে, রাখে হরি মারে কে। তিনি গুগল ঘেঁটে তাদের ফোন নম্বর জোগাড় করেন।
খবর দেওয়ার পর সুদূর হরিয়ানা থেকে ওই সংস্থার এক প্রতিনিধি দল এসে বাড়িটির সরজমিনে দেখে যান।কয়েকদিন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাঁরা ফাইনাল ভাবে জানিয়ে দেন,এই বাড়িটি তাঁরা সরাতে পারবেন এবং গোটা বাড়ি অক্ষতই থাকবে।পাশাপাশি পরিবারের সকলে কাজ চলাকালীন অন্যান্য দিনের মতো বাড়িতেই স্বাভাবিক ভাবেই থাকতে পারবেন।সেই মতো গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু হয়েছে।চারতলা বাড়িটি সরানোর জন্য ২৪ জন শ্রমিক কাজ করছেন বর্তমানে মছলন্দপুর এলাকার নির্মল বাবুর বাড়িতে।অত বড় বাড়িটি ২৬ ফুট দূরে সরানো হবে।সম্ভাব্য সময়সীমা ধরা হয়েছে মাত্র একমাস।খরচ হবে প্রায় ছয় লক্ষ টাকার মতো।রাজ্যে একতলা বা দোতালা বাড়ি সরানোর কথা শোনা গিয়েছে কয়েকবার।কিন্তু চারতলা বাড়ি সরানোর কাজ সম্ভবত এই প্রথম।মছলন্দপুরের মতো মফফসলে বেনজির এই কর্মকাণ্ড দেখতে এলাকার কৌতূহলি ভিড় বাড়ছেন।বাড়ির মালিক নির্মলবাবু জানিয়েছেন,ইউ টিউব থেকে এই সংস্থার ঠিকানা জোগাড় করেছি।
বাড়ি সরাতে ছ'লক্ষ টাকা খরচ হবে।আমাদের বাড়ির কোনও কিছু না পরিবর্তন করে ২৬ ফুট পেছনে সরানো হচ্ছে বাড়িটি।সংস্থার কথা মতো আমরা সকলেই বাড়িতে থাকি।কোনও সমস্যা না হলেও মন থেকে একটু ভয় তো থাকছেই।তবে এখনও পর্যন্ত সবকিছুই স্বাভাবিক রয়েছে।সংস্থার কর্ণধার শিবচরণ সাহানি বলেন, আমরা বহু বাড়ি সরিয়েছি।বাড়ি সরানোর পরে মোটেও দুর্বল হয় না,বরং আরও বেশি মজবুত হয়।আমরা উন্নত মানের সামগ্রী ব্যবহার করে এই কাজ করি তাই যে বাড়ি সড়ানো হবে তার টেকসই আরো বাড়িয়ে দেই আমরা।আমাদের ২৪ জন কর্মী একমাসের মধ্যে বাড়িটি ২৬ ফুট দূরে সরিয়ে দেব। উৎসাহী কৌতুহলী জনতা জানান, গ্রামবাংলার মানুষ আমরা।অর্থ বা বিভিন্ন কারনে শহরের বাবুদের মতো বেশি কিছু দেখতে বা তৈরি করার সুযোগ আমাদের ভাগ্যে জোটে না তাই খবর পেয়ে ছুটে আসলাম আমরা দেখতে। কিভাবে গোটা বাড়ি অক্ষত রেখে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে বিষয়টি দেখার কৌতুহল তো একটু আধটু জাগবেই মনে এটা তো স্বাভাবিক।এখন দেখার কাজ সম্পন্ন শেষ পর্যন্ত কি দাঁড়ায়।তবে কথায় আছে শুরুর ভালোটা যার শেষের ভালোটাও তাঁর।