কলকাতা: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে ১১ মাস পর রাজ্য জুড়ে খুলেছে স্কুল৷ চেনা ক্লাসরুমে পা দেওয়ার রোমাঞ্চে বুঁদ হয়েছিল নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ার। কিন্তু তখন কি তারা ঘুণাক্ষরেও টের পেয়েছিল স্কুলে তাঁদের ‘প্রথম’ দিনটায় লাগবে ধর্মঘটের উত্তাপ?
রাজ্য জুড়ে বাম কর্মী সমর্থকদের ডাকা ১২ ঘণ্টার ধর্মঘটে এদিন একাধিক প্রান্তে স্কুলে যেতে বাঁধা পেলেন পড়ুয়ারা। বন্ধ সমর্থকদের বিক্ষোভের মুখে মাঝপথেই বাড়ি ফিরে আসতে হল কাউকে কাউকে। যদিও কলকাতা শহরে ধর্মঘটের জেরে স্কুল ব্যাহত হওয়ার তেমন খবর পাওয়া যায়নি৷ কিন্তু একাধিক জেলা থেকেই এসেছে অশান্তির খবর।
বনধের জেরে যে সমস্ত জায়গায় এদিন স্কুল চত্বরে ঢুকতে বাঁধা পায় পড়ুয়ারা, সেগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হয় মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ, হুগলির চুঁচুড়া, মালদহের চাচোল প্রভৃতি। সবকটি স্থানেই স্কুলের প্রধান ফটক আটকে বিক্ষোভে সামিল হন বাম কর্মী সমর্থকরা। এর ফলে স্বভাবতই নাকাল হন অভিভাবকরাও। তাঁদের দাবি, ধর্মঘটের কথা মাথায় রেখে স্কুল চত্বরে আগে থেকে পুলিশি মোতায়েন প্রয়োজন ছিল। শিলিগুড়ি গার্লস স্কুলেও ধর্মঘটীদের সক্রিয়তা দেখা গেছে। মন্দিরবাজারের ঝাপবেড়িয়া হাইস্কুলের শিক্ষক তথা মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘বনধের কারণে উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও আজ ছাত্র-ছাত্রীদের উৎসাহ-উদ্দীপনা চোখে পড়ার মতো৷ দীর্ঘ ১১ মাস পরে আজ পঠন-পাঠন শুরু হওয়ায় ব্যক্তিগতভাবে স্বস্তি বোধ করছি৷ আশা করছি কিছুদিনের মধ্যেই পুরোপুরি ভাবে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরবে স্কুলগুলি৷’’
গতকাল বাম দলগুলির নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে শহরের রাজপথ। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ বাঁধা দেয়৷ নির্মম ভাবে বিক্ষোভকারীদের আক্রমণ চালানোর অভিযোগ করেছেন বাম ছাত্র সংগঠনের (SFI) রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। আন্দোলনে এই পুলিশি হস্তক্ষেপের প্রতিবাদেই শুক্রবার ১২ ঘণ্টার বাংলা বনধের ডাক দেয় বামপন্থী দলগুলি। ফলে রাজ্যে স্কুল খোলার প্রথম দিনে লাগে ধর্মঘটের রং। এদিনের বামেদের ধর্মঘটে জেলায় জেলায় অশান্তির খবর পাওয়া গেলেও মোটামুটি স্বাভাবিক ছিল কলকাতা শহরের পরিস্থিতি। বিভিন্ন এলাকায় রেল অবরোধ করেন বন্ধ সমর্থকরা। সকাল ৮টায় যাদবপুর থেকে বনধের সমর্থনে মিছিল বের করেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী।