ধর্ষণের অভিযোগ না তুললে প্রাণে মারার হুমকি, পুলিশের দ্বারস্থ নাবালিকার পরিবার

ধর্ষণের অভিযোগ না তুললে প্রাণে মারার হুমকি, পুলিশের দ্বারস্থ নাবালিকার পরিবার

14a32759ab8063b7cbf40cfe6da7b697

 

হরিশ্চন্দ্রপুর: মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর ধর্ষণ কাণ্ডে ফের শুরু রাজনৈতিক তরজা। ধর্ষক গ্রেপ্তার হওয়ার পর ধর্ষণের অভিযোগ না তুললে প্রাণে মারার হুমকি, পুলিশের দ্বারস্থ নাবালিকার পরিবার। তৃণমূলের নাম করে বিজেপি হুমকি দিচ্ছে পরিবারকে দাবি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের, যদিও অভিযোগ অস্বীকার বিজেপির। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে ওই নাবালিকা ধর্ষিতার পরিবার। অভিযোগ না তোলায় ধর্ষিতার পরিবারকে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনার জেরে আতঙ্কে রয়েছেন ধর্ষিতা নাবালিকার পরিবার। ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না তারা। কিন্তু পেটের তাগিদে নাবালিকার ভ্যানচালক বাবাকে বাইরে বের হতে হচ্ছে। ফলে তার উপরে যে কোনও সময় হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কায় কাটা হয়ে রয়েছে পরিবারটি। মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের ধর্ষিতা নাবালিকার পরিবার তাই ফের পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। এর আগে তৃণমূলের লোকজন অভিযোগ জানাতে বাধা দিচ্ছিল বলে অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। এমনকি গোটা ঘটনার পিছনে বিজেপির ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে দাবি করেছে তৃণমূল। ফের হুমকির বিষয়টি সামনে আসতেই অসহায় পরিবারটির সঙ্গে দেখা করে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস দিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

হরিশ্চন্দ্রপুরের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া কিশোরীকে জোর করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল প্রতিবেশী কিশোরের বিরুদ্ধে। যার জেরে ওই নাবালিকা অন্তঃস্বত্তা হয়ে পড়ে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ঘটনাটি ঘটলেও দিন কয়েক আগে নাবালিকার পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হয়। হুমকি দেওয়ায় এতদিন ভয়ে তারা অভিযোগ জানাতে পারেননি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন ধর্ষিতার পরিবার। কয়েকদিন পালিয়ে থাকার পর পুলিশ অবশ্য অভিযুক্ত কিশোরকে গ্রেফতার করে। কিন্তু কিশোর গ্রেফতার হওয়ার পর হুমকির মাত্রা আরও বেড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। অভিযোগ না তুলে নিলে পরিবারটিকে প্রাণে মারা হবে বলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে ফের পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন নাবালিকার বাবা। খবর পেয়েই রবিবার নাবালিকার বাড়িতে যান জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান, সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল অঞ্চল চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা। তাদের কাছেও আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন নাবালিকার পরিবার।

নাবালিকার মা এদিন বলেন, আমরা আতঙ্কে বাড়ি থেকে বের হতে পারছি না। কিন্তু স্বামীকে ভ্যান নিয়ে বাইরে যেতে হয়। নইলে খাবার জুটবে না। অভিযোগ তোলার জন্য ক্রমাগত প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ওর কিছু হলে আমাদের পথে বসতে হবে। তৃণমূলের নেতারা এসে আশ্বাস দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি।

তৃণমূল জেলা সাধারণ সম্পাদক বুলবুল খান এদিন বলেন, জেলা নেতৃত্বের নির্দেশেই নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছি। তৃণমূলের লোকজন হুমকি দিচ্ছে এটা ঠিক নয়। এটা বিজেপির ষড়যন্ত্র। কিছু লোক তৃণমূলের নাম করে এসব করছে বলে জানতে পেরেছি। পরিবারটিকে আমার ফোন নম্বর দিয়ে এসেছি। কোনও সমস্যা হলে ফোন করে জানাতে পেরেছি। আমরা পরিবারটির পাশে রয়েছি। পাশাপাশি কারা হুমকি দিচ্ছে তাদের চিহ্নিত করে পুলিশকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আবেদনও করেছি।

বিজেপির মণ্ডল সভাপতি রুপেশ আগরওয়ালা বলেন,” বিজেপি এই ধরনের সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে না। তৃণমূল নেতারা বারবার কেন ধর্ষিতার বাড়ি যাচ্ছে। তারা গিয়ে কি বোঝাতে চাইছে। নিশ্চয় এই নিয়ে তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ। মানুষ দেখছে তৃণমূলকে, ভোটের পর থেকে তারা কি করছে সারা রাজ্যে।” হরিশ্চন্দ্রপুর থানা পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগ পেয়েছি, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *