আসানসোল: কালো মেঘ যেন রাতের অন্ধকারকেও হার মানাচ্ছে। দূরের কোনও কিছু দেখা যাচ্ছে না। ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে বাড়ির দরজা, জানালা রীতিমতো কাঁপছে। কখন ভেঙে পড়বে তার ঠিক নেই। সারিবদ্ধভাবে থাকা নারকেল গাছগুলিও নুইয়ে পড়ছে। বেশ কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে। যত সময় গড়িয়েছে বৃষ্টির সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ার দাপট বেড়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টা নাগাদ সাইক্লোনের দাপট সবচেয়ে বেশি ছিল। তখন মনে হচ্ছিল, এই বুঝি আবাসন ভেঙে পড়বে। পুরো পারাদ্বীপ শহর স্তব্ধ। বহু জায়গাতে বিদ্যুৎ সংযোগও নেই। মোমবাতি জ্বালিয়ে কোনওরকমে থাকতে হচ্ছে। বাড়ি থেকে বেরনোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সুদূর ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ফণী নিয়ে ফোনে এমনই আতঙ্কের কথা শোনাচ্ছিলেন কুলটির মিঠানি গ্রামের অংশুমান পুইতুণ্ডি। ফার্টিলাইজার সংস্থায় কাজ করার সুবাদে তিনি দীর্ঘদিন ধরেই পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে পারাদ্বীপে থাকেন। তাঁদের নিয়ে উদ্বিগ্ন রয়েছেন পরিজনরা।
অংশুমানবাবু বলেন, আমরা ফার্টিলাইজার সংস্থার আবাসনের থাকি। আবাসন থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে সমুদ্র অবস্থান করছে। তিন কিলোমিটার দূরে রয়েছে মহানদী। সমুদ্রের জল ফুঁসছে। সকাল ১১টা’র সময় শহরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সাইক্লোনের দাপট সবচেয়ে বেশি ছিল। কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা বোঝা যাচ্ছে না। কারণ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবাইকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে শহরের অবস্থা যে বেহাল হয়ে পড়েছে তা ভালোভাবেই টের পাচ্ছি। পারাদ্বীপ শহরের উপর দিয়ে এর আগেও অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। কিন্তু, এমন ঝড়ের দাপট ১৯৯৯ সালের পর আর দেখিনি। সেবার ঝড় বন্ধ হওয়ার পর পুরো শহরকে তছনছ হতে দেখেছিলাম। এবারও কী যে হবে কিছু বুঝতে পারছি না।