কলকাতা: একদিকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে নার্সদের রাজ্য ছাড়ার সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমে। ইতিমধ্যে এই নিয়ে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যবাসীর মধ্যে। কিন্তু এই বিষয়ে কী বলছেন খোদ সেই নার্সরা? কেন রাজ্য ছাড়ছেন তাঁদের একাংশ? মণিপুর ফিরে যাওয়া নার্সরা কী জানালেন?
রাজ্য ছেড়েছেন ৫০০ জনেরও বেশি নার্স। করোনার এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় বিশেষ প্রভাব পড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এই বিষয়ে মণিপুরে ফিরে যাওয়া নার্সরা সাফ জানিয়েছেন ফিরে যাওয়ার কারণ। একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসোলশন ওয়ার্ডে নিযুক্ত ছিলেন লেইসরাম রোমিয়া চানু। প্রয়োজনে ডবল শিফটে কাজ ছাড়াও অফ ডে-তে কাজ করতে হতো বলে তিনি জানিয়েছেন। এছাড়াও তাঁর কথায়, 'হাসপাতালের তরফে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। আমি হস্টেলে থাকতাম। বাইরে বাজার করতে গেলে আমাদের কাছে অনেকেই জিনিসপত্র বিক্রি করতে চাইত না। বরং অন্য দোকান দেখিয়ে দিত।' মাঝেমধ্যে খাবার না কিনেই বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাঁকে।
কমলিনী দেবী নামে এক নার্সের কথায়, 'বাজারে গেলে করোনা করোনা বলে চিৎকার করতো। কাজের শেষে বাড়ি ফেরার সময় মাঝেমধ্যে গেটের দারোয়ান ঢুকতে দিত না।' এছাড়াও মণিপুরিদের দেখলেই যে তাচ্ছিল্য করা হতো, সেই কথাও স্বীকার করেছেন তিনি। কয়েকজন কর্মীর রিপোর্ট পজিটিভ আসায় না খেয়ে পর্যন্ত কাটাতে হয়েছে তাঁদের। সেই পরিস্থিতিতে হাসপাতালের তরফে খোঁজ নেওয়া হয়নি বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। যদিও নার্সদের এহেন হেনস্থার বিষয়টি নিয়ে কেউ অভিযোগ করেনি বলেই জানানো হয়েছে আমরি হাসপাতাল ও পিয়ারলেস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে। যদি জানানো হতো তাহলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই উপযুক্ত পদক্ষেপ করতো বলে জানিয়েছে তারা। আমরি হাসপাতালের তরফে রূপক বড়ুয়া বলেন, 'হতে পারে ওঁরা কোনও কারণে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন।'
মণিপুরি ইন কলকাতার তরফে সভাপতি কেএসএইচ শ্যামকেশো নার্সদের অনিয়মিত বেতনের কথাও বলেন। পাশাপাশি তিনি জানান, 'এমনিতেই স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা নিয়ে হেনস্থার শিকার হচ্ছেন। উত্তর-পূর্বের বাসিন্দা হওয়ায় এঁরা বেশিই বৈষম্যের শিকার হচ্ছিলেন।' -ফাইল ছবি৷