কলকাতা: রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভূতপূর্ব একটি মামলা করলেন ‘পিপল ফর বেটার ট্রিটমেন্ট’ (পিবিটি)-এর সভাপতি কুণাল সাহা৷ তিনি ১০০ কোটি টাকার এই মামলা করেছেন আইন ও বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে৷ মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে মামলার শুনানি হয়৷ বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য এটি গ্রহণ করে তিন সপ্তাহ পর শুনানির দিন ধার্য করেছেন৷
সম্মানহানি ও মানসিক চাপের জন্য এই মামলা করেছেন কুণালবাবু৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই চিকিৎসকের স্ত্রী অনুরাধা সাহা ১৯৯৮ সালে ভারতে বেড়াতে এসে অসুস্থ হয়ে মারা যান৷ এই চিকিৎসায় গাফিলতিতে এই মৃত্যুর অভিযোগ আনেন কুণালবাবু৷ কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতি তাঁর রায়ে এই মৃত্যুর জন্য অন্য চিকিৎসকের বদলে কুণালবাবুকেই দায়ী করেন৷ এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হন কুণালবাবু৷ স্ত্রী-র মৃত্যুর পর চিকিৎসকদের অবহেলার অভিযোগে আইনি লড়াই লড়েন ড: সাহা৷
২০০৯ সালে সুপ্রিম কোর্ট সুকুমার মুখোপাধ্যায় সহ কিছু চিকিৎসক ও একটি নামী নার্সিং হোমের বিরুদ্ধে সাড়ে ১১ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেয়৷ ভারতের কোনও চিকিৎসার গাফিলতিতে এটাই সর্বোচ্চ আর্থিক শাস্তির নির্দেশ। হাইকোর্টের বিচারপতির সেই রায় নস্যাৎ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কুণালবাবু বলেন, এর পর মানহানি এবং মানসিক পীড়নের অভিযোগ এনে হাইকোর্টের যে বিচারপতি আমাকে দায়ী করেন, তাঁর বিরুদ্ধেও আইনি পদক্ষেপ নিই। ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৯৯ ও ৫০০ ধারায় মামলা করি সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্ট ওই বিচারপতির আইনি নির্দেশকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য’ বলে মন্তব্য করে। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হই। হাইকোর্ট রাজ্যের আইন ও বিচার বিভাগকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয়। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে ওই দফতরের কাছে বার বার আবেদন করেও কাজ হয়নি। এ কারণে বাধ্য হয়ে এই বিভাগের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের মামলা করেছি। এই ক্ষতিপূরণের টাকা পেলে পুরো অর্থ এ ব্যাপারে আইনি সচেতনতা তৈরি এবং চিকিৎসার অবহেলায় ক্রতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বরাদ্দ করা হবে বলে লিখিত আশ্বাসও দিয়েছেন কুনালবাবু। আজ সন্ধ্যায় তাঁর আইনজীবী শ্রীকান্ত দত্ত বলেন, “বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য তিন সপ্তাহ বাদে বিষয়টি নিয়ে শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন৷”