নিজের মেয়েকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করলেন দম্পতি, কিন্তু কেন জানেন?

নিজের মেয়েকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করলেন দম্পতি, কিন্তু কেন জানেন?

নদীয়া: সমাজকে বার্তা দিতেই কৃষ্ণ গঞ্জ ব্লকের শ্যামনগর গ্রামে এই আয়োজন। মেয়েকে লক্ষ্মীরূপে পুজো করলেন পঞ্চায়েত অফিসার দম্পতি।

এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে। আমারই ঘরে থাকো আলো করে। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় কন্যাই সম্পদ। বিশেষ করে মায়ের কাছে তাদের সন্তানই মুল সম্পদ। সমাজের কাছে এমন বার্তা পৌঁছে দিতে চেয়ে নিজের কন্যাকে লক্ষীরূপে পুজো করলেন দম্পতি। ১০ বছরের শিশু কন্যাকে রীতিমত লক্ষ্মীরূপে সাজিয়ে ব্রাহ্মণ ডেকে পুজো করলেন পঞ্চায়েত অফিসার পরিবারের লোকজন।

মঙ্গলবার সন্ধায় নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের শ্যামনগর গ্রামে এমনি এক বাতিক্রমী  লক্ষী পূজা হল। পুরোহিত শ্যামল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘‘মেয়েরা তো মায়েরই জাত। তাই এখানে কুমারী মেয়ের লক্ষী পূজা করা হল। সম্পুর্ণ শাস্ত্রমতে কুমারী কন্যাকে এখানে লক্ষীরূপে পূজা করা হয়েছে।’’ কৃষ্ণগঞ্জের দুর্গাপুরে মিতালী বিশ্বাসের বাপের বাড়ি। কর্মসুত্রে বনগাঁ গ্রাম পঞ্চায়েতের একজিকিউটিভ অফিসার৷ দেবাশিস বিশ্বাস হিজুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের একজিকিউটিভ অফিসার। দেবাশিস বিশ্বাসের সাথে মিতালী বিশ্বাসের বিবাহ হয়  শ্যামনগরে। অশীতিপর বাবা বাবা অমল বিশ্বাস, মা চম্পা বিশ্বাস, বোন প্রিয়ালি এবং এক ছেলে ও এক মেয়ে দেবাদৃতা ও দেবাপ্রিয়নকে নিয়ে সুখের সংসার।

এই বাড়িতেই ঘটা করে মঙ্গলবার দেবাদৃতাকে লক্ষীরূপে পূজা করা হল৷ কেন? দেবাশিসবাবু বলেন, আমরা পঞ্চায়েত অফিসার হয়ে দেখতে পায় বিভিন্ন জায়গায় কন্যা সন্তানকে অনেক মানুষই অবহেলা করে থাকেন। পুত্রবধু হিসেবে অন্যের কন্যাসন্তানকে নিজের ঘরে আনার পর তার প্রতি অনেকেই অত্যাচার করেন। আমরা মনে করি পুত্র ও কন্যা সন্তান উভয়েই সমান।

অন্যদিকে দেবাদৃতার মা মিতালী বিশ্বাস বলেন, ‘‘কর্মক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই কিভাবে মেয়েদের উপর অত্যাচার হয়৷ সেই অভিজ্ঞতা থেকে নিজেরা চিন্তাভাবনা করি, কন্যাকে বাঁচাতে হবে ৷ অনেক পরিবারই জানে না মেয়েরা সমাজের কতবড় সম্পদ।’’ তিনি আরও জানান, আমার মেয়ে জন্ম নেবার পর থেকেই আয়, উন্নতি সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই আমরা স্বামী স্ত্রী  মিলে সিদ্ধান্ত নিই এবছর মাটির প্রতিমা বাদ দিয়ে নীজের মেয়েকেই লক্ষী রুপে পূজা  করব ,তাই করলাম। আমরা চাই প্রতিটি মানুষই যেন নিজেদের কন্যাসন্তানকে মাতৃরূপে সম্মান করেন। দেবাদৃতার দাদু বলেন, আমিতো ভাবতেই পারছি না এটা আমার দিদি ভাই। লালশাড়ি, মাথায় মুকুট গলায় মালা , একহাতে পদ্ম, কাঁকে ছোট কলস মুদ্রা দেবদৃতাকে সত্তিই লক্ষীর মতোই লাগছিল। জীবন্ত লক্ষ্মীকে দেখতে ভিড় করেছিলেন এলাকার বহু মানুষও৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × 2 =