রামপুরহাট: লোকসভায় এরাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের কোন জোট হবে না বলে দায়িত্বের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র৷ সেই সঙ্গে তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার ডাক দিলেন কংগ্রেস নেতৃত্ব৷ মঙ্গলবার আইন অমান্য আন্দোলনের ডাক দেয় বীরভূম জেলা কংগ্রেস৷ রামপুরহাট পাঁচমাথা মোড়ে এই উপলক্ষে একটি সভার আয়োজন করা হয়৷ সভায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অবজারভার গৌরব গগৈ, রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজৎমুখোপাধ্যায়, বীরভূম জেলা কংগ্রেস সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি, হাঁসন কেন্দ্রের বিধায়ক মিল্টন রশিদ৷
সভায় সমস্ত নেতাই রাজ্যে তৃণমূল এবং কেন্দ্রে বিজেপির সমালোচনা করেন৷ অভিজিৎমুখোপাধ্যায় বলেন, “অনেক চেষ্টা করেও তৃণমূল ব্রিগেড ভরাতে পারেনি৷ কংগ্রেসের প্রতি মানুষের ভরসা বাড়ছে৷ কংগ্রেসের নাম হাইজ্যাক হয়ে যাচ্ছে। কেউ আগে কেউ পরে লেজুর লাগিয়ে কংগ্রেসকে ব্যবহার করছে। এই সরকার চাকরি দিতে পারে না। তাই গ্রামে গ্রামে মদের দোকান খোলার লাইসেন্স দিচ্ছে। মদের দোকান খোলার প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে৷”
বিধায়ক মিল্টন রসদিকে মদের বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে আন্দোলনের জন্য সমর্থন করেন। অনুব্রত মণ্ডলের নাম না করে অভিজিৎবাবু বলেন, “বীরভূম জেলায় জন্মগ্রহণ করেছেন নোবেল জয়ী অমর্ত্য সেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এসেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এখন আমরা শুনতে পাই কলকাতার ফাটা কেষ্ট, আর এখানে রয়েছেন মোটা কেষ্ট। এখন জবাব দেওয়ার সময় এসেছে। আপনারা রবীন্দ্রনাথ, প্রণব মুখোপাধ্যায়, অমর্ত্য সেঙ্কে চান, না এমন একটি ব্যক্তিকে চান যার মাথায় অক্সিজেন কম যায়। সময় এসেছে বদলা নেওয়ার। এওই বদলা বুলেট নয় নালতে নিয়ে হবে। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন এই নির্বাচন পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে না৷”
প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “একসময় যারা তৃণমূল দলকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন তারাই আজ বঞ্ছিত। তাদের জায়গা দখল করে নিয়েছে কিছু অসামাজিক লোক৷” বঞ্চিত তৃণমূল কর্মীদের কংগ্রেসে ফিরে আসার আবেদন জানান প্রদীপবাবু। রাজ্যে ঢালাও মদের দোকান প্রসঙ্গে প্রদীপবাবু বলেন, “পাশের রাজ্য বিহার মদ বন্ধ করে উন্নতির দিকে এগোচ্ছে। আর আমাদের রাজ্য মদের লাইসেন্স দিচ্ছে। আমাদের ছেলেরা মদ চাই না। আর এই সরকার মদের দোকান দিয়ে যুবকদের অসামাজিক লোক তৈরি করবে। কি দুর্ভাগ্য আমাদের৷”
গৌরব গগৈ বলেন, “ভারতবর্ষের ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন রাহুল গান্ধী। কাউকে কাউকে এই বক্তব্য ভালো লাগছে না। তার মধ্যে এ রাজ্যে রয়েছে তৃণমূল। রাহুল গান্ধী প্রধানমন্ত্রী তাদের পছন্দ নয়। এই জন্যই তিনি ব্রিগেডে জনসভা করেন। তিনি চেয়েছিলেন ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হবেন। কিন্তু এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সেই স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যাবে৷” সাংবাদিকদের সঙ্গে সোমেন মিত্র পরিষ্কার জানিয়ে দেন, লোকসভায় এরাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে কোন জোট হবে না। কংগ্রেস এখন একলা চলো নীতি নিয়ে চলবে। পড়ে কাদের সঙ্গে জোট হবে তা পরে ভাবা যাবে৷