কলকাতা: লকডাউন কাটিয়ে টলি পাড়ায় শুরু হয়েছে লাইট-ক্যামেরা-অ্যাকশন৷ কাজ চলছে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই৷ সরকারি নির্দেশিকা মেনে ধারাবাহিকগুলির সেটে শুটিং চলছে ৩৫ জন শিল্পী ও টেকনিশিয়ান নিয়ে৷ এর পরেও রয়ে গিয়েছে নানাবিধ সমস্যা৷ টেলি-জট কাটাতেই সোমবার নবান্নে অভিনেতা-অভিনেত্রী, পরিচালক, প্রযোজক, টেকনিশিয়ানদের নিয়ে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ শোনেন সকলের মন্তব্য৷
এদিনের আলোচনায় বেশ কিছু বিষয় উঠে এসেছে৷ শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলার পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলা ছাড়া ভারতবর্ষের অন্য কোথাও এই মুহূর্তে টেলি চ্যানেলের কাজ শুরু হয়নি৷ এখানে শুটিং ফ্লোরে ৩৫ জনের সীমাবদ্ধতা রেখে কাজ চলছে৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছেন শিল্পীরা৷ তাঁরা যথেষ্ট সতর্ক৷ এখনও পর্যন্ত টেলি-পাড়ায় কোভিড আক্রান্তের কোনও হদিশ নেই৷
এদিন আর্টিস্ট ফোরামের তরফে ডেস্টিনেশন অফ শুটিং হিসাবে বাংলার দরজা খুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে৷ সেই আবেদনে সাড়া দিয়েই বিভিন্ন রাজ্যের ইন্ডাস্ট্রিকে বাংলায় এসে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এখানে টেলি এবং টলি ইন্ডাস্ট্রিতে এসে কাজ করার কথা বলেছেন তিনি৷ সেইসঙ্গে আউটডোর শুটিং-এর ক্ষেত্রে এদিন ৩৫ জনের বদলে ৪০ জনকে নিয়ে কাজ করার অনুমতি দেন মুখ্যমন্ত্রী৷
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এতদিন নন-ফিকশন শুটিং বন্ধ রাখা হয়েছিল৷ এবার থেকে নন-ফিকশন শুটিংয়েও ছাড়পত্র মিলবে৷ তবে বন্ধ থাকবে রিয়্যালিটি শো-গুলি৷ দর্শক নিয়ে এই অনুষ্ঠান চালানো সম্ভব নয়৷ এর জন্য রিয়্যালিটি শো গুলিকে নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রিয়্যালিটি শো হলেও, ৪০ জনকে নিয়েই তা করতে হবে৷ তিনি আরও বলেন, অনেক ছেলে-মেয়ে আছে, যাদের আরও ভালো করে প্রশিক্ষণ দেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে৷ যাতে তাঁরা আরও ভালো করে টলি এবং টেলি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারে৷ এই লক্ষ্যেই এবার থেকে টলিউডের সঙ্গে যৌথভাবে টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে কাজ করবে রাজ্য সরকার৷
তাঁর কথায়, বাণিজ্যিক দিক থেকে এই মুহূর্তে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ওয়েব৷ এখানে প্রচুর শিল্পী কাজও করতে পারবেন৷ তাই এবার থেকে ওয়েবের কাজও শুরু করা যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান৷ এ জন্য একটা নির্দিষ্ট কমিটি গড়ে তোলার কথাও বলেন তিনি৷ টেলি ও টলি দুনিয়ার কাজ যাতে সুষ্ঠভাবে চলতে পারে, সে জন্য নির্দিষ্ট সময় অন্তর টেলি ইন্ডাস্ট্রিকে গাইডলাইনও দেওয়া হবে হলেও উল্লেখ করেছেন৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বাণিজ্যিক স্বার্থে বাংলা টেলিভিশন চ্যানেলগুলিকে বাইরে থেকে আরও বেশি ধারাবাহিক ও অনুষ্ঠানে বাংলায় নিয়ে আসার কথাও বলা হয়েছে৷
এদিনের বৈঠকে অন্যতম ইস্যু ছিল শিলপীদের পারিশ্রমিক। আর্টিস্ট ফোরামের তরফে জানানো হয়, ফোরামে প্রায় সাড়ে তিন হাজারের বেশি আর্টিস্ট রেজিস্ট্রার্ড রয়েছেন। তবে করোনা পরিস্থিতিতে প্রত্যেকে কাজ পাচ্ছেন না৷ কম সংখ্যক শিল্পী নিয়ে কাজ করার জন্য অনেকের হাতেই কাজ নেই। ফলে টাকাও নেই। তার উপর চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কম টাকায় কাজ করার জন্য চাপ দিচ্ছেন শিল্পীদের।