কলকাতা: আবহাওয়া দফতরের খবর বলছে, জানুয়ারির মাঝামাঝি জাঁকিয়ে শীত পড়েছে রাজ্য জুড়ে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক আবহাওয়ার দিকে তাকালে তা বোঝার উপায় নেই একেবারেই। মাস কয়েক বাদেই ভোট। তা নিয়েই এখন রীতিমতো সরগরম বঙ্গ রাজনীতির অন্দরমহল। কিন্তু এই চরম দ্বন্দ্বের আবহেও তৈরি হল রাজনৈতিক সম্প্রীতির নজির।
কিছুদিন আগেই দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহরের জনৈক বিজেপি কর্মী। সেই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনার মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যেই নিহত ব্যক্তির স্ত্রীর জন্য চাকরির ব্যবস্থা করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগে বিরোধী শিবিরের দিকে এভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে মানবিকতার যে নজির সৃষ্টি করেছেন তিনি ইতিমধ্যেই তা সাড়া ফেলেছে শাসকদলের অভ্যন্তরে।
জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হালিশহর এলাকার ওই নিহত বিজেপির বুথ সভাপতির নাম সৈকত ভাওয়াল। এদিন তাঁর স্ত্রী নবপর্ণা ভাওয়ালের হাতে রাজ্য সরকারি চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিয়েছেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। এই কাজে পার্থ বাবুর সঙ্গে ছিলেন যুব তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যও। নবপর্ণা দেবী রাজ্যের দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তরে চাকরি পেয়েছেন বলে জানা গেছে তৃণমূল সূত্রের খবরে।
রাজ্য সরকারের এহেন মানবিকতায় শোকের মাঝেও খানিক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন নিহত বিজেপি কর্মীর পরিবারের লোকজন। নিহত সৈকত ভাওয়ালের সঙ্গে নবপর্ণা দেবীর বিয়ে হয়েছিল ২০১৯ সালে। বিবাহিত জীবন শুরুর বছর খানেকের মধ্যেই রাজনৈতিক সূত্র ধরে আসে বিপত্তি। চাকরি পেয়ে তাই রাজ্য সরকারের কাছে কৃতজ্ঞ নবপর্ণা ভাওয়াল। তিনি বলেন, “আমাদের সাহায্য করার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ থাকব।” প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দলীয় কর্মসূচীতে যোগ দিতে গিয়ে খুন হন বিজেপির হালিশহরের বুথ সভাপতি সৈকত ভাওয়াল। গণপিটুনিতে প্রাণ হারান তিনি। শাসকদলের দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনায় অভিযোগের নিশানায় ছিলেন। কিন্তু সূত্রের খবর, নবপর্ণা দেবী ঘনিষ্ঠ মহলে দাবি করেছেন তাঁর স্বামীর মৃত্যু রাজনৈতিক নয়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।