সোনারপুর: করোনা আক্রান্তের দেহ দাহকার্যের জন্য না গিয়ে বাড়িতেই পরে থাকল প্রায় বারো ঘণ্টা। অবসরপ্রাপ্ত ওই পুলিশকর্তার দেহ সৎকার নিয়ে অসন্তোষ ছড়াল পরিবারের লোকেদের মধ্যে। সোনারপুর থানার চম্পাহাটি রায়পুরের বাসিন্দা ওই ব্যক্তি গত তিনদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। বিভিন্ন উপসর্গ দেখে তাঁকে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। পয়লা সেপ্টেম্বর তাঁর করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকে বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি।
শুক্রবার সকাল ছটা নাগাদ মারা যান তিনি। পরিবারের দাবি মৃত্যুর খবর দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট সমস্ত প্রশাসনিক বিভাগে। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ বারবার সোনারপুর থানা ও বিডিওতে খবর দেওয়ার পরও কোনও সহযোগিতা মেলেনি। মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্য গাড়ি পাঠানোর কথা বলেও কোনওভাবেই তা পাঠানো হয়নি। চূড়ান্ত বিভ্রান্ত পরিবারের মানুষজন বুঝতে পারেননি কী করতে হবে। বেলা এগারোটা নাগাদ বিডিও থেকে ফোন করে কাগজপত্র নিয়ে থানায় যেতে বলা হয় পরিবারের লোকজনদের।
এরপরই শুরু হয় প্রাণান্তকর সমস্যা। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা ছুটে বেড়াতে হয় প্রয়োজনীয় কাগজ জোগাড় করতে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে হাসপাতাল প্রায় ছুটে ছুটে বেরান তাঁরা মৃতের শংসাপত্র জোগাড়ের জন্য। হাতে পায়ে ধরে অবশেষে মেলে সেই শংসাপত্র। পরিবারের লোকেদের অভিযোগ প্রায় বারো ঘণ্টা পর অবশ্য দেহ সৎকারের জন্য নিতে আসে সোনারপুর প্রশাসন।
পরিবারের লোকেরা চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ এই অনভিপ্রেত সমস্যার জন্য। তবে সোনারপুর প্রশাসনের তরফে মৃতের পরিবারের অন্যান্য লোকেদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পরিবারের লোকেদের হয়রানির কথা জানার পর বারুইপুর মহকুমাশাসক এবং সোনারপুরের বিডিও নিজেরাই এব্যাপারে উদ্যোগ নেন। এরপরেই দেহ সৎকারের ব্যবস্থা করা হয় শুক্রবার সন্ধ্যা নাগাদ। করোনায় আক্রান্তের দেহ যেখানে একেবারে আলাদা করে প্যাকিং করে দাহের জন্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সেখানে কীভাবে ওই ব্যক্তির দেহটি প্রায় বারো ঘণ্টা ফেলে রাখা হল তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে শুরু তরেছে এলাকাবাসীর মধ্যে।