কলকাতা: পশ্চিমবঙ্গে অমিত শাহের রথযাত্রার অনুমতি চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ বিজেপি। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রথযাত্রা বা ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ যাত্রার সরকারি অনুমতি না পেয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করল বিজেপি। এর আগে অন্তত তিন বার স্বরাষ্ট্রসচিব অত্রি ভট্টাচার্যের সঙ্গে রথযাত্রার বিষয়ে বৈঠক করতে চেয়েছে বিজেপি। কিন্তু রাজ্যের তরফে এই বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত পাওয়া যায়নি। শেষে কেন্দ্রীয় পার্টির অনুমতি নিয়েই আদালতের পথে বঙ্গ-বিজেপি। শুক্রবার দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দুস্থান সমাচার-কে বলেন, “আমরা আজ আদালতের স্বারস্থ হলাম”|
সম্প্রতি রাহুল সিনহা বলেছিলেন, “দু’মাস হয়ে গিয়েছে রথযাত্রার অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে একাধিকবার। পুলিশের ডিজি, নবান্ন, সবাইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। দেখা করতে চেয়েছি। কিন্তু উত্তর বা সাড়াশব্দ পাইনি। সৌজন্য দেখাতে পারে না। অসভ্য সরকার। রাজ্যপালকে এবিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে অনুরোধ করা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী যেন রথযাত্রা হয়। সরকার প্রশাসনিক যন্ত্র কাজে লাগিয়ে বাধা দিচ্ছে।” রথযাত্রার টেম্পো তুলতে রাজ্যে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় চার-পাঁচ জায়গায় সভা করবেন তিনি। এর আগে রাজ্য বিজেপি জানিয়ে দিয়েছিল, তিন জায়গার রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সোমবার রথযাত্রার অনুমতি নিয়ে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে আবেদন করেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। একইসঙ্গে কলকাতার মেয়র নির্বাচন সংক্রান্ত পুরসভা আইন সংশোধনী বিল অনুমোদন না করার অনুরোধও করা হয় রাজ্যপালকে। ২০১৯ লোকসভা ভোটের আগে রথযাত্রার মাধ্যমে রাজ্যে নির্বাচনী প্রচারে ঝড় তুলতে চায় পদ্মশিবির। ৭ ডিসেম্বর কোচবিহার, ৯ ডিসেম্বর দক্ষিণ ২৪ পরগণার গঙ্গাসাগর ও ১৪ ডিসেম্বর বীরভূমের তারাপীঠ থেকে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ যাত্রার সূচনা হবে।
এই তিন জায়গা থেকে রথযাত্রার উদ্বোধন করবেন শাহ। রথযাত্রা কালে লোকসভা ভিত্তিক বড় সভা করার পরিকল্পনা রয়েছে বিজেপির। দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ও মন্ত্রীরা ওইসব সভায় থাকবেন বলে আগেই জানিয়েছিল বিজেপি। এদিন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও সর্বভারতীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, “রথযাত্রা চলাকালীন চার-পাঁচ জায়গায় সভা করবেন নরেন্দ্র মোদী। যদিও এখনও তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি।” জানা গিয়েছে, মোদীর সভা হতে পারে শিলিগুড়ি, মালদা, বীরভূম, দুর্গাপুর-আসানসোল ও কৃষ্ণনগরে। লোকসভা নির্বাচনের আগেই একপ্রস্থ নির্বাচনী প্রচার করতে আপাতত মরিয়া গেরুয়া শিবির। সম্প্রতি দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায়, ও রাহুল সিনহা সহ রাজ্যের কিছু নেতা রাজভবনে প্রায় ৪০ মিনিট নানা বিষয় নিয়ে রাজ্যপালের কাছে অনুযোগ জানান। বৈঠক থেকে বেরিয়ে বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়ে দেন, রথযাত্রা নিয়ে রাজ্যপাল আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি বিবেচনা করবেন। ঝাড়গ্রামে এক সভায় সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “বিজেপির জয় শ্রীরাম থাকলে আমাদের মা দুর্গা আছেন।” রাহুলবাবু পাল্টা বলেন, “দুর্গা এবার টিএমসি অসুরকে বধ করবেন। এখন উনি দেখছেন, মুসলমানদের চেয়ে দুর্গাকে বেশি দরকার। তাই আল্লাকে ছেড়ে দিয়েছেন। বাংলার মুসলমানেরা এটা বুঝুন। এতদিন ইমাম ইমাম আর আল্লা আল্লা করে বৈতরণী পার হয়ে এবার দুর্গা, বিষ্ণুকে স্মরণ করছেন।”
