এবার নিখরচায় হবে করোনায় মৃতের সৎকার, অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্যে!

এবার নিখরচায় হবে করোনায় মৃতের সৎকার, অক্সিজেনের চাহিদা মেটাতে বড় সিদ্ধান্ত রাজ্যে!

কলকাতা: সালটা ২০১৬, ২৪ নভেম্বর৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চালু করেছিলেন ‘সমব্যথী’ প্রকল্প৷ কেননা, দরিদ্র পরিবারে কারও মৃত্যু হলে শোক ছাপিয়ে ধরা দেয় অর্থিক পরিস্থিতি৷ সৎকার থেকে আদ্যশ্রাদ্ধ, কোত্থেকে হবে আসবে টাকা? আয়োজন নিয়ে কূল পান না মৃতের পরিজনেরা৷ ‘সমব্যথী’ প্রকল্প চালু করে মৃতদেহ সৎকারের জন্য হাতে-হাতে দু’হাজার টাকা তুলে দেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এবার করোমার মহা-প্রলয়ে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হলে রাজ্য সরকার বিনামূল্যে মৃতের সৎকার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷

মৃতদেহ সৎকার নিয়ে ব্যাপক অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় আজ স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ কে দ্বিবেদী এবং পুর ও নগর উন্নয়ন দফতরের সচিব ও আধিকারিকদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করেন৷ সেখানে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়াও করোনা পজিটিভ রিপোর্ট থাকলে রোগীকে বিনামূল্যে অক্সিজেন দেওয়ার বিষয়টি ঠিক হয়েছে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে৷ এই দিকে রাজ্য স্বাস্থ্য কমিশন আজ এক নির্দেশিকায় করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য সব বেসরকারি হাসপাতালে মোট শয্যার ৬০ শতাংশ বরাদ্দ রাখতে হবে বলে নির্দেশিকায় জানিয়েছে৷ ক্রিটিকাল কেয়ার ওয়ার্ডে থাকলেও তার প্রয়োজন নেই এমন রোগীদের বিষয়গুলি হাসপাতালে সুপারদের নজর দিতে হবে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে৷

শনিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ইন্টিগ্রেটেড কোভিড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম চালু করা হল৷ এর মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টার একটি কন্ট্রোলরুম খোলা হল৷ যার সাহায্যে গোটা রাজ্যের হাসপাতালগুলির সঙ্গে সমন্বয় রাখা যাবে৷ এছাড়াও করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে অক্সিজেনের জোগান৷  যদিও এ কথা মানতে নারাজ রাজ্য সরকার৷  এদিন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়, বর্তমানে রাজ্যে প্রতিদিন ২২৩ মেট্রিকটন অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে৷ উৎপাদন হচ্ছে ৪৯৭ মেট্রিকটন অক্সিজেন৷ যদিও এর একটা অংশ কেন্দ্র নিয়ে যাচ্ছে৷ তা সত্বেও কোনও ব্যক্তি কোভিড আক্রান্ত হলে তাঁর পরিবারের লোকজন অক্সিজেন পাচ্ছেন না বলে বারবার অভিযোগ উঠছে৷  ওষুধ বা অক্সিজেনের দোকানগুলিতে যে অক্সিজেন রয়েছে, সেখান থেকে মিলছে না অক্সিজেনের সিলিন্ডার৷ তার প্রেক্ষিতে বলা হয়, কোনও চিকিৎসকের প্রিসক্রিপসন নিয়ে অক্সিজেন কিনতে যেতে হবে না৷ দোকানদাররা  কোভিড সার্টিফিকেট দেখেই অক্সিজেন দেবে৷ ফলে প্রয়োজন মতো কোভিড রোগীরা দোকান থেকে অক্সিজেন কিনতে পারবেন৷

খোলা বাজারে আর নয়। শুধুমাত্র হাসপাতাল থেকেই এবার মিলবে রেমডেসিভির। কারণ সব করোনা রোগীর জন্য রেমডেসিভির নয়। এমনই নির্দেশিকা স্বাস্থ্য দফতরের৷ রেমডেসিভির নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর একটি নয়া গাইডলাইন প্রকাশ করেছে৷ যে গাইডলাইনে নির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে, সমস্ত করোনা আক্রান্ত রোগীর জন্য রেমডেসিভির ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা নেই৷ ১০ থেকে ২০ শতাংশ করোনা আক্রান্তের চিকিৎসার ক্ষেত্রে রেমডেসিভির-এর প্রয়োজন রয়েছে৷ এই ওষুধ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কেস টু কেস বিচার করে দেখতে হবে৷ এছাড়াও কোনও হাসপাতাল বা নার্সিংহোম প্রেসক্রিপশনে রেমডেসিভির লিখে ছেড়ে দিতে পারবে না৷ বরং হাসপাতাসকেই চিকিৎসার জন্য রেমডেসিভির জোগাড় করে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে হবে৷ পাশাপাশি এটাও বলা হয়েছে সংক্রমিত হওয়ার ৫ থেকে ১০ দিন পর্যন্ত রেমডেসিভির দেওয়া যেতে পারে রোগীকে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven − two =