আজ বিকেল: ফনি যত বাংলার দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ততই আয়লার স্মৃতি উসকে দিচ্ছে সুন্দরবনের বাসিন্দাদের। আজ থেকে ঠিক নয় বছর আগে এউ মে মাসেই আয়লার কোপে তছনছ হয়ে গিয়েছিল গোটা সুন্দরবন এলাকা। সেই বিপর্যয়ের রেশ কাটিয়ে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগলেও ভয়বহতা এখনও টের পান বাসিন্দার। চোক বন্ধ করলেই সেই বিপর্যয়ের মুহূর্ত ফিরে আসে। সারাদিন ওড়িশার খবর শুনে আতঙ্কের প্রহর গুনছে বাসিন্দারা। তবে রাত হলে সেই আতঙ্ক যে বাস্তবে পরিণত হতে চলেছে এবিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের উপকূল এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা বাড়তে শুরু করেছে। অন্যদিন জোয়ারের সময় যতটা জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়, তার থেকে বেশি এই জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতা। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসের উপর ভিত্তি করে দিল্লি আইআইটি’র তরফে জলোচ্ছ্বাসের একটি চার্ট তৈরি করে হয়েছে। এই চার্টে দেখা যাচ্ছে, যেখানে বালাসোরে জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ ৩.৭ মিটার সেখানে ডায়মন্ড হারবারের কাছে জলোচ্ছ্বাসের পরিমাণ ৪.৫ মিটার। এ ছাড়াও তটরেখার হ্রাস-বৃদ্ধি বিচার করে দেখা যাচ্ছে, সর্বাধিক বৃদ্ধি হয়েছে ডায়মন্ড হারবার উপকূলে।
শুধুমাত্র ফণীর প্রভাব নয়, এই জলোচ্ছ্বাস বাড়ার আরেকটি কারণ হলো ভরা কোটাল। শুক্রবার রাত থেকেই পড়ছে অমাবস্যা। অর্থাৎ সমুদ্রে দেখা যাবে ভরা কোটাল। এমনিতেই ভরা কোটাল সমুদ্রের জল ফুলে ফেঁপে ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। এ বার সেই রূপ আরও ভয়ঙ্কর হতে চলেছে বলেই পূর্বাভাস। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ফণী ও ভরা কোটালের জোড়া ফলায় সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকা। বাঁধ ভেঙে সমুদ্রের জল স্থলভাগে ঢুকে পড়তে পারে বলে পূর্বাভাস। আর সে রকম হলে বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হবে সুন্দরবন এলাকায়। এই আশঙ্কায় আগে থেকেই সেনা ও বিপর্যয় মোকাবিলা দলকে তৈরি রাখা হয়েছে।