কলকাতা: এবার তেলেগু ভাষাকেও সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সোমবার বিধানসভায় রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রাজ্যে কামতাপুরী, রাজবংশী, নেপালি, পাঞ্জাবি-সহ মোট ১২টি ভাষাকে সরকারি স্বীকৃতি দিয়েছিল।
সোমবার রাজ্য বিধানসভায় সরকারি ভাষা সংক্রান্ত ‘দি ওয়েস্ট বেঙ্গল অফিশিয়াল ল্যাঙ্গুয়েজ সংশোধনী বিল ২০২১’ এর উপরে ভাষণ দিতে গিয়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী তথা পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যের যেসমস্ত এলাকায় মোট জনসংখ্যার ন্যূনতম ১০ শতাংশ মানুষ একই ভাষা ব্যবহার করে রাজ্য সরকার সেই এলাকায় সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য ওই ভাষাকে সরকারি স্বীকৃতি দিতে পারে।”
তিনি আরও জানিয়েছেন, “এই আইনের ওপর ভিত্তি করেই পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর পুরসভা এলাকায় বসবাসকারী ৬৮ হাজারেরও বেশি তেলেগু ভাষাভাষী মানুষের আবেদন মেনে এই ভাষাকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হল।” প্রসঙ্গত খড়গপুর পুরসভা এলাকার প্রচুর তেলেগু ভাষাভাষীর মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই ভাষাকে রাজ্যের সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলেন। অবশেষে ভোটের মুখে তাদের সমস্ত আবেদন মেনে নিল রাজ্য সরকার। এই নিয়ে মোট ১৩টি ভাষাকে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ভাষা স্বীকৃতি হিসেবে দেওয়া হল।
নেপথ্যে কি ভোটের অঙ্ক? তেমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল৷ কেননা, খড়গপুরে দক্ষিণ ভারতীয়দের সংখ্যা যথেষ্ট৷ একটি বড় অংশের বাসিন্দা তেলেগু ভাষায় কথা বলেন৷ দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয় বিধায়কের মাধ্যমে দক্ষিণ ভারতের এই ভাষাকে সরকারি ভাষার স্বীকৃতি দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয়রা৷ খড়গপুরের বাসিন্দাদের আবেদন মেনে রাজ্যের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর৷ সরকারি সিদ্ধান্তে তেলেগু ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়ায় খুশির হাওয়া খড়গপুরে৷
বাংলায় সরকারি ভাষা একাধিক৷ এর আগে হিন্দি, উর্দু থেকে নেপালি, গুরুমুখী ও ওড়িয়া ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে৷ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে রাজবংশী থেকে শুরু করে কামতাপুরী এবং সাঁওতালি ভাষাকে৷ এবার যুক্ত হল তেলেগু৷ তবে, গোটা বিষয়টিকে অবশ্য অন্যভাবে দেখছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ৷ রাজনৈতিক মহলের ধারনা, রাজ্যে ভোট প্রচারে এসে শাহ-নাড্ডার যখন বাংলা শেখায় গুরুত্ব দিচ্ছেন, তখন তেলেগু ভাষাকে সরকারি ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে ভোটের ময়দানে বাড়তি সুবিধা ছিনিয়ে নেওয়ার কৌশল থাকছে তৃণমূল শিবিরে৷