B.ED পরীক্ষার আগে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাণ্ডব, অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা

B.ED পরীক্ষার আগে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাণ্ডব, অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা

 

কলকাতা: বিদ্যাসাগর কলেজ, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পর ফের আক্রান্ত আরও এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়ে বেপরোয়া ভাঙচুর, লক্ষাধিক টাকার জিনিসপত্র চুরি, অনলাইনের সার্ভার রুম ভেঙে তছনছ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে৷ গোটা ঘটনার পিছনে অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা কর্তৃপক্ষের৷ উত্তরপত্র ছিঁড়ে তাণ্ডব৷ থানায় দায়ের অভিযোগ৷ শিক্ষা দফতরে অভিযোগ কলেজ কর্তৃপক্ষের৷ খাস কলকাতার বুকে রাতের অন্ধকারে কে বা কারা প্রশাসনিক দফতরে তাণ্ডব চালালো, বিক্ষুব্ধ পড়ুয়াদের দিকে আঙুল তুলছে কর্তৃপক্ষ৷

শিক্ষক প্রশিক্ষণের জন্য বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডের ডেভিয়াস ট্রেনিং কলেজের ক্যাম্পাসে রয়েছে শিক্ষক প্রশিক্ষণ বিশ্ববিদ্যালয়৷ অভিযোগ, সিসিটিভি বিকল করে প্রশাসনিক ভবনে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্ভার রুম থেকে শুরু করে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসিটিভি ক্যামেরা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে৷ অনলাইন পঠন-পাঠনের নেটওয়ার্ক ভাঙচুর করা হয়েছে৷ চেয়ার-টেবিল ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে৷ পরীক্ষার খাতা ছিঁড়ে চালানো হয়েছে তাণ্ডব৷

কয়েক ঘণ্টা ধরে বেপরোয়া তাণ্ডব চলছে বলে অভিযোগ৷ ইতিমধ্যেই ক্যাম্পাসে তাণ্ডবের ঘটনায় বালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ৷ পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছে৷ গোটা ঘটনার পেছনে অন্তর্ঘাত থাকতে পারে বলে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা৷

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এর মধ্যে কোন অন্তর্ঘাত থাকতে পারে৷ কেননা আগামী পয়লা অক্টোবর থেকে বিএডের পরীক্ষা নেওয়ার কথা৷ গোটা প্রক্রিয়াটি হওয়ার কথা ছিল অনলাইনে৷ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীদের একটি গোষ্ঠী এই তাণ্ডব চালাতে পারে৷ কেননা তারা বেশ কিছুদিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে বলে গুজব ছড়িয়েছিল৷ কিন্তু পরীক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পরীক্ষা যে  হবেনা, তা আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু তার পরেও ছাত্রদের মধ্যে ভুয়ো খবরে ছড়িয়ে ছিল বিভ্রান্তি৷ অনেকেই প্রচার করতে শুরু করেছিলেন, এবার সশরীরে হয়তো পরীক্ষা দিতে হবে৷ আর নিয়ে শুরু হয় ক্ষোভ৷ কে বা কারা এই ঘটনা ঘটল? তা জানতে ইতিমধ্যে তদন্ত চেয়ে থানা ও শিক্ষা দফতরে অভিযোগ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ৷

প্রশাসনিক দপ্তরের কেন এরকম ভাঙচুর চালানো হল? পরীক্ষার আগে তাণ্ডবের ঘটনায় প্রশ্নের মুখে গোটা পরীক্ষা পদ্ধতি৷ কেননা, অনলাইনে পরীক্ষা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল৷ সার্ভার নষ্ট করে দেওয়ায় আগামী দিনে কীভাবে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব? তা নিয়েও শুরু হয়েছে উদ্বেগ৷ কে বা কারা রাতের অন্ধকারে ভাঙচুর চালানো তা নিয়ে শুরু হয়েছে উদ্বেগ৷ পিছনে পাঁচিল টপকে দুষ্কৃতীরা ক্যাম্পাসে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অনুমান পুলিশের৷

ক্যাম্পাসে তাণ্ডব চলল, আর কিছুই জানতে পারল না পুলিশ? তাও আবার বালিগঞ্জের মতো অভিজাত এলাকায়? পড়ুয়াদের মধ্যে অসন্তোষের আগাম খবর থাকা সত্ত্বেও কেন ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়নি? তাণ্ডবের সময় কি অরক্ষিত ছিল ক্যাম্পাস? প্রশ্ন উঠছে নিরাপত্তা নিয়েও৷  শিক্ষক হতে চেয়ে যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, যাদের হাতে রয়েছে পরবর্তী পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দায়িত্ব, তাঁদের বিরুদ্ধে কিনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাণ্ডবের অভিযোগ? হবু শিক্ষকদের একাংশের নৈতিকতা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন৷ হবু শিক্ষকদের একাংশ যদি এমন ঘটনা ঘটান, তাহলে তাঁরা শিক্ষক হবে পড়ুয়াদের কী শেখাবেন? প্রশ্ন উঠছেই৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − ten =