কলকাতা: এক দশক আগে তৃণমূল কংগ্রেসের হাতেই পতন হয়েছিল তিন দশক পুরানো বাম সম্রাজ্যের। এক দশক পর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা বাম শূন্য। ১৯৪৬ সালের পর এই প্রথম। সিপিএম নেতা তথা উত্তর দমদম বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী তন্ময় ভট্টাচার্য তার দলকে একহাত নিয়েছেন। একটি টিভি চ্যানেলে তন্ময় বলেছেন, “বাংলার জনতা, পার্টিকে (সিপিএম) রাস্তায় ফুটো বাটি হাতে পাঠিয়ে দিয়েছে।” নাম না করে সিপিএমের উপরতলার নেতাদের তন্ময় শব্দবাণে বিদ্ধ করেছেন। তিনি বলেন, “লোকসভায় শূন্য করার পরে কেউ দায় নিলেন না … বিধানসভায় শূন্য করার পরেও কেউ দায় নেবেন না৷ এটা হতে পারে না।”
অন্যদিকে, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু সংযুক্ত মোর্চার পক্ষে বিবৃতিতে স্বীকার করে নিয়েছেন, ফলাফল দেখে প্রাথমিক ভাবে হয়ত একথা বলা যেতে পারে বিজেপি-কে পরাস্ত করার জন্য জনগণের তীব্র আকাঙ্ক্ষা থেকেই তৃণমূল লাভবান হয়েছে। বিমানবাবু জানিয়েছেন, “সপ্তদশ বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশ হয়েছে। এই নির্বাচনে বিজেপি-র পরাজয় উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচনে জয়ী হয়েছে। সংযুক্ত মোর্চা নির্বাচনে বিপর্যস্ত হয়েছে। কেন এই বিপর্যয় হলো তা আমরা পরবর্তী সময়ে সংযুক্ত মোর্চার সমস্ত শরিক নিজ নিজ দলে আলোচনা করে, যৌথ পর্যালোচনা করে কারণ অনুসন্ধান করব এবং সেই অনুযায়ী শিক্ষা গ্রহণ করব।”
তিনি আরও জানান, “উল্লেখযোগ্য ঘটনা এই যে বিগত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এরাজ্যে ১৮টি আসনে জয়লাভ করে বাংলা জয়ের বাসনায় আরএসএস, সঙ্ঘ পরিবারকে ব্যবহার করে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হবার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে, বেশ কিছু হেলিকপ্টার ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গের জেলায় জেলায় দাপিয়ে বেড়িয়েছিল। তারপরও বাংলার মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু বিজেপি বাংলার সমাজধারায় একটি স্থায়ী ক্ষত তৈরি করেছে যার পরিণতিতে ভবিষ্যতে বাংলার সমাজ ও সংস্কৃতিতে ক্ষতিসাধন হতে পারে।”
তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সব শক্তির কাছেই দায়িত্ব বহুগুণ বেড়ে গেল। সংবিধানের বিধি রক্ষা করা, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত করা, ধর্মনিরপেক্ষতা রক্ষা করা, শ্রমজীবী মানুষের রুটি রুজির লড়াই সংগ্রামকে বিস্তৃত ও শক্তিশালী করার দায়িত্ব পালন করবে সংযুক্ত মোর্চা। এই নির্বাচনে সংযুক্ত মোর্চার পক্ষে ভূমিকা পালন করেছেন যে কর্মীরা, তাঁদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। গণনা পরবর্তী সময়ে রাজ্যের সর্বত্র শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সকলের কাছে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।