তমলুক: তৃণমূল পরিচালিত গ্ৰাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূলেরই উপ-প্রধান সহ অন্যন্য পঞ্চায়েত সদস্যরা। ঘটনাটি ঘটছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার এগরা ১ ব্লকের সাহাড়া পঞ্চায়েতের। আর এই ঘটনার জেরে বেকায়দায় রাজ্যের শাসকদল তৃনমূল কংগ্রেস। সাহাড়া পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মিলন কুমার দে ওই পঞ্চায়েতের প্রধান শান্তি লতা দাস এবং তাঁর স্বামী প্রভুপদ দাস(পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ) বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা এবং পঞ্চায়েতের পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরণের বিরুদ্ধে সরব হন।
অভিযোগ, পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি ও পঞ্চায়েতের উন্নয়ন কাজকর্মে বাধা দেয়। এমনকি এবিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান ও পূর্ত সঞ্চালক এবং অন্যান্য সদস্যরা প্রতিবাদ জানালে তাদের প্রাণ নাশের ও আইন পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। পাশাপাশি পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজে বাধা সৃষ্টি করে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ও তাঁর স্বামী। কেউ কেউ বলছে যেন গ্ৰাম পঞ্চায়েতটা তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারা ব্লকে কাজের নিরিখে সাহাড়া গ্ৰাম পঞ্চায়েত সবদিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে।
সোমবার সাহাড়া পঞ্চায়েতের সাধারণ সভা আয়োজিত হলেও ব্রাত্য খোদ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান , সঞ্চালক ও পঞ্চায়েতের অন্যান্য সদস্যরা। এক্ষেত্রে উঠছে একাধিক প্রশ্ন ? প্রশ্ন যে সাধারণ সভায় কেনই বা পঞ্চায়েতের সদস্য-সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। কিভাবে তাদের ছাড়া এই সাধারণ সভা আয়োজিত হচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে কিন্তু স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শান্তিলতা দাসের দাবি, উপ-প্রধান, সঞ্চালক ও পঞ্চায়েত সদস্যদের সাধারণ সভাতে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তারা আসেনি। তারা পঞ্চায়েতের কোনও সভায় উপস্থিত হন না। পাশাপাশি পঞ্চায়েতের উন্নয়ন মূলক কাজ করতে দিচ্ছে না। তবে স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মিলন কুমার দে জানিয়েছেন, অর্থ উপ-সমিতির সভা না করে কিভাবে সাধারণ সভা আয়োজনের নামে মনগড়া , অগণতান্ত্রিক ও স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত গ্ৰহণ করে প্রধান পঞ্চায়েতের নৈরাজ্য প্রতিষ্ঠা করছেন। পঞ্চায়েতের সভায় টেন্ডার সভার সম্মতি না নিয়ে কি ভাবে প্রধান কাজের টেন্ডার মঞ্জুর করতে পারে – তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন খোদ পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান , সঞ্চালক ও অন্যান্য সদস্যরা। তারা জানাচ্ছেন পঞ্চায়েত প্রধানের যাবতীয় কাজ সম্পূর্ণ বেআইনি।
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান শান্তিলতা দাস। তিনি বলেন, “উপ-প্রধানের সমস্ত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি আমাদের সঙ্গে উন্নয়নের কাজে সহমত না হয়ে পঞ্চায়েতের উন্নয়নের কাজে বাধা দিচ্ছেন৷’’ যদিও স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপ-প্রধান মিলন কুমার দে ও সঞ্চালক উত্তম কুমার জানা বলেন, ” প্রধানের বিরুদ্ধে ভুরিভুরি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। উনি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের সবক্ষেত্রেই অগণতান্ত্রিক কাজকর্ম করে চলেছেন। এবিষয়ে বারবার বিডিও ও জেলাশাসককে জানিয়েও এখন পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি৷’’ এবিষয়ে এগরা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমিয় রাজ বলেন, ” ইতিমধ্যে এই ঘটনা নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে একটি অভিযোগ পত্র জমা পড়েছে। বিডিও-র সঙ্গে আলোচনা করে ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’