কলকাতা: লকডাউনেও মিষ্টিমুখ থেকে বঞ্চিত হবেনা বাঙালি। কারণ লকডাউনের আওতা থেকে এবার মিষ্টির দোকানকেও ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে একথা জানান তিনি। তবে অল্প সময়ের জন্যই মিলবে ছাড়। বেলা ১২টা থেকে ৪টে পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা যাবে মিষ্টির দোকানগুলি। তবে বাঙালির মিষ্টিমুখের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ যে কারণে মিষ্টির দোকান খোলা রাখার সিদ্ধান্ত তার হল, লকডাউনের জেরে লিটার লিটার দুধ নষ্ট হচ্ছে দুধ ব্যবসায়ীদের। মমতা বলেন, ‘আমরা বাঙালি, মিষ্টি খেতে ভালবাসি। পাশাপাশি, যে চাষিদের দুধ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, সেটাও আমাদের দেখতে হবে। তার জন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অল্প অল্প করে মিষ্টির দোকান খোলা থাক। ’
লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন। সরকারও সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে দুধ বিক্রেতারা পড়েছেন মহা সমস্যায়। কারণ মিষ্টির দোকানগুলোকে লকডাউনের আওতায় রাখা হয়। কিন্তু রাজ্যে দৈনন্দিন উৎপাদিত দুধের একটা বড় অংশ দিয়েই ছানা তৈরি হয় যার বেশিরভাগটাই মিষ্টি তৈরির কাজে লাগে। লকডাউনে মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় ছানার চাহিদাও কমে গেছে ফলে দুধের বিক্রিও কমে যায়। পরিস্থিতি এমন হয় যে লিটার লিটার দুধ নর্দমায় ফেলে দিতে বাধ্য হন ব্যবসায়ীরা। আয় বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়। এই পরিস্থিতি সামাল দিতেই এগিয়ে এসেছেন মমতা। তাই সারাদিন না হলেও আংশিক সময়ের জন্য মিষ্টি বিক্রির জন্য ছাড় দেওয়া হবে। স্বাভাবিক ভাবেই রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন দুধ বিক্রেতা থেকে মিষ্টি ব্যবসায়ীরা। কিন্তু নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে দোকান-বাজারে যেভাবে ভিড় হচ্ছে, তাতে স্যোশাল ডিসট্যান্সিং বজায় রাখা দায় হচ্ছে। এবার মিষ্টির দোকানও খোলা থাকলেও এক শ্রেণির দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ বাইরে বেরোনোর নতুন অজুহাত দেখাবেন। ফলে লকডাউনের অর্থহীন হয়ে উঠবে।
এদিকে ২১ দিনের লকডাউন শেষ হচ্ছে ১৪ এপ্রিল অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের দিন। বাঙালির এই বিশেষ উৎসবের দিনে কিভাবে কিছুটা ছাড় দেওয়া যায় সেবিষয়ে আগামী ১৩ এপ্রিল আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। তবে সরকার যেভাবে খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে, তাতে ঘরবন্দী দশায় ওইদিন আতিথেয়তায় ঘাটতি হলেও রসনাতৃপ্তির ঘাটতি হবেনা। আর এখন তো মিষ্টিমুখেও আর বাঁধা রইলোনা।