কলকাতা: মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর আজ বিধানসভা ভবনে গিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর ইস্তফাপত্র গৃহীত হয়নি, আইনি জটিলতা রয়েছে তা আলাদা ব্যাপার, কিন্তু নিজে যা করবেন বলে ঠিক করেছেন তা ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছেন শুভেন্দু। ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি সরাসরি চলে গেলেন বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সংসদ সুনিল মন্ডলের বাড়িতে। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সুনিল মন্ডলের বাড়িতে ছিলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি! আপাত নিরিখে এই দুজনই ‘বিদ্রোহী’ তৃণমূল। তাই শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাদের বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং ইঙ্গিতপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভবনে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সুনীল মন্ডলের বাড়িতে যান শুভেন্দু অধিকারী। তিনি যখন তাঁর বাড়িতে গিয়েছেন, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন আসানসোলের পৌর প্রশাসক তথা আরো এক ‘বিদ্রোহী’ তৃণমূলী জিতেন্দ্র তিওয়ারি। একইসঙ্গে সুনিল মন্ডলের বাড়িতে ছিলেন কালনার তৃণমূল বিধায়কও। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমানের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডল জানিয়েছিলেন, দলে যারা ক্ষমতায় রয়েছেন তারা নিজেরাই চান না এই দল থাকুক, নতুন এবং পুরনো মিলে কাজ হচ্ছে না, তাই এখন দলে থাকা মুশকিল। সেই হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর সুনীল মণ্ডলকে ঘিরে জল্পনা সৃষ্টি হয়েছিল। এবার তাঁর বাড়িতেই আরো কয়েকজন বিদ্রোহী তৃণমূলীরা বৈঠক করেছেন। এর পাশাপাশি জানা যাচ্ছে, অন্যান্য সব জেলার ‘বিদ্রোহী’ তৃণমূল বিধায়ক এবং কাউন্সিলার সবাই সুনীল মন্ডলের বাড়িতে জড়ো হয়েছিলেন বৈঠকের জন্য। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারীর ইস্তফা দেওয়ার পর হয়তো আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বড় সংখ্যায় তৃণমূল সদস্যরা ইস্তফা দিতে পারেন! যদি এমনটা হয় তাহলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ব্যাপকভাবে চাপে পড়ে যাবে তৃণমূল কংগ্রেস, তা বলাই বাহুল্য।
এদিকে জিতেন্দ্রর বিস্ফোরক চিঠির পর এমনিতেই অস্বস্তিতে রয়েছে তৃণমূল। রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা রাজ্য সরকার দেয়নি বলে অভিযোগ তুলেছিলেন আসানসোলের পৌর প্রশাসক। সেই নিয়ে ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি দেন তিনি। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বঙ্গ রাজনৈতিক মহলে। প্রসঙ্গত, এদিন বিকেল চারটে নাগাদ বিধানসভা ভবনে পৌঁছে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে ইস্তফা দিতে চান শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু সেই সময় সেখানে ছিলেন না তিনি। অতঃপর স্পিকারের সচিবের কাছে সেই পদত্যাগপত্র পেশ করেন তিনি। যদিও উদ্যোগ না থাকায় তাঁর পদত্যাগপত্র এখনো পর্যন্ত গৃহীত হয়নি।সূত্রের খবর আগামী শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জনসভার মধ্যে দিয়েই বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি যে বিজেপিতে যোগদান দেবেন সে নিয়ে চর্চা প্রথম থেকেই ছিল, তবে শুধু জনসমক্ষে ঘোষণা বাকি ছিল। এখন তিনি যে বিজেপিতে যোগদান করছেন তা মোটামুটি পরিষ্কার।