মেদিনীপুর: ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের জন্য জেলা সফর শুভেন্দু অধিকারীর গড় মেদিনীপুর থেকেই শুরু করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর আজকের এই সভাকে ঘিরে উন্মাদনার পারদ ছিল তুঙ্গে, কারণ অবশ্যই সেই শুভেন্দু অধিকারী। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনুমান ছিল, হয়তো আজকের সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে প্রত্যক্ষ বার্তা দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু আদতে তেমনটা হয়নি। এদিকে এও প্রায় প্রত্যাশিত ছিল, মমতার আজকের এই সভায় থাকবেন না শুভেন্দু। হল ঠিক তাই।
একদিকে যখন সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপিসহ বিরোধীদের বার্তা দিচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অন্যদিকে কোলাঘাট হয়ে বাংলার রাজধানী কলকাতায় পাড়ি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এক কথায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা সম্পূর্ণরূপে এড়িয়ে গিয়েছেন তিনি। এদিন দুপুরে কোলাঘাট হয়ে দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজ থেকে মা ফ্লাইওভার হয়ে সুকিয়া স্ট্রিট হয়ে ছুটতে থাকে শুভেন্দুর কনভয়৷ কিন্তু, আচমকা কেন শুভেন্দুর এই কলকাতা সফল? তা এখনও স্পষ্ট নয়৷
এদিন জনসভায় পূর্ব এবং পশ্চিম মেদিনীপুরের সকল বিধায়কদের উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেইমতো সব বিধায়করা উপস্থিত থাকলেও ছিলেন না অধিকারী পরিবারের কেউ। যদিও মঞ্চে ভাষণ দেওয়ার সময়ে প্রত্যক্ষভাবে শুভেন্দু অধিকারী বা অধিকারী পরিবারের নাম করে কিছুই বললেন না তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে পরোক্ষভাবে তিনি যে বার্তা দিলেন তা আদতে কার বা কাদের উদ্দেশ্যে দিলেন তা বোঝা খুব একটা শক্ত ব্যাপার নয়। এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করেন, তৃণমূল একেবারেই দুর্বল দল নয়। যারা মনে করছেন, তৃণমূল কংগ্রেসকে ব্ল্যাকমেইল করবে, বার্গানিং করবে, তৃণমূল কংগ্রেসকে নির্বাচনের সময় দুর্বল করবে, সেই বিজেপি এবং তাদের বন্ধুদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বললেন, আগুন নিয়ে খেলার চেষ্টা কেউ যেন না করে। এর পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দেন, তৃণমূল কংগ্রেস নন্দীগ্রাম ভোলিনি, নিতাই এবং সিঙ্গুর ভোলেনি। সিপিএম এবং কংগ্রেস একসঙ্গে বিজেপির হাত ধরেছে, কারা বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তারা এতে সফল হবে না বলে স্পষ্ট দাবি করেন তিনি।
এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি দাবি করেন, কংগ্রেস এবং সিপিএম বিজেপিকে সমর্থন করছে। এক সময় যে সিপিএম দল একের পর এক সন্ত্রাস করেছিল তারা এখন বিজেপির সবচেয়ে বড় রক্ষক, আর ওদিকে কংগ্রেস হয়ে গেছে তক্ষক। এই তিন দল অঙ্কা-বঙ্ক-সঙ্কা। মমতার কথায়, বাংলা ভালো আছে, তাই সকলের হিংসা হচ্ছে। বহিরাগতদের এনে বাংলা দখল করার চেষ্টা করা হচ্ছে, তৃণমূল কংগ্রেস তা হতে দেবে না। এই প্রেক্ষিতেই মমতার দাবি, বিজেপির কাছে টাকা আছে, বহিরাগত গুন্ডা আছে, কিন্তু তাদের কাছে তৃণমূল কংগ্রেসের মতো একজন কর্মীও নেই, তাদের হাতে তৃণমূল কংগ্রেসের মতো পতাকা নিয়ে। বাংলায় জনগণ তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছে।