ফের সিপিএমের কর্মীদের বিজেপিতে আসার বার্তা দিলেন শুভেন্দু, ফের বামের ভোট চলে যাবে রামে?

ফের সিপিএমের কর্মীদের বিজেপিতে আসার বার্তা দিলেন শুভেন্দু, ফের বামের ভোট চলে যাবে রামে?

নিজস্ব প্রতিনিধি: পঞ্চায়েত নির্বাচনে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে সিপিএম। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে এই স্বস্তি বেশিদিন ধরে রাখা যাবে না। আগামী লোকসভা নির্বাচনে আগের মতোই ফের ভরাডুবি হতে পারে সিপিএমের, এমনটাই মত রাজনীতির কারবারিদের একাংশের। বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটে তৃণমূলের সঙ্গে একমঞ্চে সিপিএম রয়েছে বলেই এমনটা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে আলিমুদ্দিনের। এরপরই ড্যামেজ কন্ট্রোলের জন্য জেলায় জেলায় নীচুতলার কর্মী-সমর্থকদের বোঝানোর চেষ্টা করছেন রাজ্য সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব। শুধুমাত্র বিজেপির মোকাবিলা করার জন্যই সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী জোটে তৃণমূল থাকলেও তাতে বাধ্য হয়ে সামিল হতে হয়েছে সিপিএমকে, এমনটাই বোঝানো হচ্ছে তাঁদের। তবে তাতে কতটা চিঁড়ে ভিজবে সেটা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সিপিএমের নীচুতলার কর্মী-সমর্থকদের বিশেষ বার্তা দিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁদের বিজেপিতে আসার বার্তা দিলেন। বৃহস্পতিবার দুর্গাপুরের একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেই সূত্রে শুভেন্দুকে বলতে শোনা গিয়েছে,” ২০১১ সালে সিপিএমের বিরোধী দলনেতা ছিল। তবে এখন বেঙ্গালুরুতে সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গে ভাব, ভালবাসা তৈরি হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের। দিল্লিতে দোস্তি আর রাজ্যে কুস্তি করা যায় না। আপনারা কিছু বললে মানুষ বিশ্বাস করে না। বিজেপি লাগাতার সংগ্রাম করে। তাই মানুষ বিশ্বাস করে। আর তাই নীচুতলার সিপিএম কর্মীদের বলছি, চোর পিসি ভাইপোকে  তাড়াতে বিজেপিতে আসুন।” 

 

এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিকবার সিপিএমের নীচুতলার কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে এমন বার্তা দিয়েছেন শুভেন্দু। বিষয়টি যে সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের একেবারেই ভাবাচ্ছে না, তা কিন্তু নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই জেলায় জেলায় তৃণমূলের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন সিপিএমের বহু কর্মী। তাতে সিপিএমের বেশ কয়েকজন কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। এমনকী সিপিএমের প্রার্থী জিতে গেলেও তাঁকে জোর করে হারিয়ে দিয়ে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থীকে শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে বেশ কিছু জায়গায়। এছাড়া ফল প্রকাশের পর সিপিএমের বহু জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যকে জোর করে তৃণমূলে নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। এই আবহের মধ্যে বেঙ্গালুরুতে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের বৈঠকে যখন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি পাশাপাশি বসে থাকেন, তাতে যে সিপিএমের নীচুতলার কর্মী-সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হবেন এতে আর আশ্চর্য হওয়ার কি আছে? যদিও সিপিএম বারবার বলছে সর্বভারতীয় স্তরে যে জোট গঠন করা হয়েছে তার প্রভাব রাজ্যে পড়বে না। অর্থাৎ বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে আগের মতোই লড়াই চলবে বলে বারবার দাবি করছে আলিমুদ্দিন। কিন্তু সিপিএমের শীর্ষ নেতৃত্ব যতই একথা বলুন না কেন, তাতে নীচুতলার কর্মী-সমর্থকরা কতটা প্রভাবিত হবেন সেটা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির থেকে কিছুটা ভোট সিপিএমের দিকে ফিরে আসলেও তা আগামী লোকসভা নির্বাচনে ধরে রাখা যাবে কিনা সেটা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে আলিমুদ্দিনের। আর ঠিক সেই সময় শুভেন্দু সিপিএম কর্মী-সমর্থকদের পাশে টানতে যে বার্তা দিয়েছেন তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। বারংবার শুভেন্দুর এই আহ্বানের কোনও অভিঘাত বঙ্গ রাজনীতিতে পড়ে কিনা এখন সেটাই দেখার।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

1 × three =