কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যু নিয়ে এখন রাজনৈতিক তরজাও তুঙ্গে উঠে গিয়েছে। ঘটনার পর থেকে কয়েক দিন রাজনীতি সংক্রান্ত কথাবার্তা না হলেও ক্রমশ সেই আঙ্গিকেই ঢুকে পরে ছাত্র মৃত্যুর ইস্যু। স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন বেহালার এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে যাদবপুর কাণ্ডে মুখ খুলে মার্কসবাদী প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাদবপুরকে আতঙ্কপুর বলতেও দ্বিধা করেননি তিনি। ঘটনাচক্রে একে একে সব রাজনৈতিক দলই এখন যাদবপুর ইস্যুতে ঢুকে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ডে সভা করে বিজেপি যুবমোর্চা৷ ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী৷ কিন্তু পরে তিনি অভিযোগ করেন, সভা থেকে ফেরার পথে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়েছে। সবটাই হয়েছে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ ভাবে৷ তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টাও করা হয়েছে বলে দাবি তোলেন তিনি। এমনকি নিষিদ্ধ নকশালপন্থী ছাত্র সংগঠন এর পিছনে আছে বলে জানান শুভেন্দু। ঘটনায় যাদবপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরও করেন তিনি। তবে রাজ্যের শাসক দলকে যাদবপুরের ঘটনায় অভিযুক্ত করতে তিনি সময় নিয়েছেন তা নয়। তাদের বিরুদ্ধে আরও বড় অভিযোগ এনেছেন বিজেপি বিধায়ক। এদিন নদীয়ার রানাঘাটে মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সহ স্থানীয় সাংসদ এবং একাধিক বিধায়করা। ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে প্রায় আধ ঘণ্টা কথা বলেন তারা। শুভেন্দু অধিকারী মৃত ছাত্রের ভাই এবং মায়ের সঙ্গে আলাদা করেও কথা বলেন। এরপরই বাইরে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বিরাট দাবি করেন।
শুভেন্দুর কথায়, আদালতের তত্ত্বাবধানে চললে তবেই বিচার পাওয়া যাবে, আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে চললে ফলাফল শূন্য হবে। পাশাপাশি যাদবপুরের ছাত্র মৃত্যু কাণ্ডে অনেক তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের আড়াল করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও বিস্ফোরক দাবি করেন শুভেন্দু। একই সঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু ছাত্রদের সঙ্গে মাওবাদী যোগের অভিযোগও করেন বিজেপি নেতা। তবে তিনি এখানেই থামেননি। ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’ প্রসঙ্গ তুলে রাজ্য সরকারকে বিঁধে আরও বড় অভিযোগ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে। স্পষ্ট দাবি করে তাঁর বক্তব্য, রাজ্য সরকার যাদবপুরের টুকরে টুকরে গ্যাংকে মদত দিতে চায় বিজেপি এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে হেট ক্যাম্পেন করার জন্য। শুধুমাত্র রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য এই কাজ করে তারা।
মনে রাখতে হবে, শুক্রবারই যাদবপুরে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি এবং বামপন্থী ছাত্র সংগঠন রেভোলিউশনারি স্টুডেন্টস ফেডারেশনের মধ্যে হাতাহাতিতে তুলকালাম কাণ্ড বাধে। বেশ কয়েকজন ছাত্র আক্রান্তও হন। পাশাপাশি বিজেপি যুব মোর্চার প্রতিবাদ সভায় যখন বক্তব্য রাখতে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী তখন তাঁকে কালো পতাকা দেখায় বাম ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা। তাঁকে উদ্দেশ্য করে স্লোগানও দেওয়া হয়৷ এর পরেই শুরু হয় মারামারি৷