জয়পুর: পুরুলিয়ার সভা থেকে ফের আক্রমণাত্মক মেজাজে শুভেন্দু অধিকারী৷ চাকরি থেকে শিক্ষক নিয়োগ, একাধিক ইস্যুতে ঝাঁঝালো ভাষায় বিঁধলেন নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক৷ একুশের নির্বাচনে বাংলার বেকারত্ব, নিয়োগ দুর্নীতি বিরোধীদের হাতে যে অন্যতম ধারালো অস্ত্র হতে চলেছে সে বিষয়ে প্রায় নিশ্চিত রাজনীতির কারবারিরা৷ আর এদিনের সভা থেকে সেই অস্ত্রেই শান দিলেন শুভেন্দু অধিকারি৷
আরও পড়ুন- বক্তব্য বলতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ফের ‘বিদ্রোহ’! মাঝপথে বক্তৃতা থামালেন মমতা
এদিন তিনি বলেন, নতুন চাকরি তো দূরের কথা, মন্ত্রিসভায় বসে সাড়ে পাঁচ লক্ষ পদের অবলুপ্তি ঘটানো হয়েছে৷ এর বদলে ৩০ থেকে ৪০ হাজার চুক্তি ভিক্তিক কর্মী নিয়োগ করেছে তৃণমূল সরকার৷ আর কী ভাবে এই চুক্তি ভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করা হয় তা সকলেই জানেন৷ বনসহায়ক পদে নিয়োগ নিয়ে কী হয়েছিল, তার পর্দা ফাঁস করে দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তাঁক কটাক্ষ, গোটা তালিকাটাই আসে কালিঘাটের শান্তিনিকেতন থেকে৷
শিক্ষক নিয়োগ নিয়েও এদিন শাসক দলকে তুলোধোনা করেন শুভেন্দু অধিকারি৷ নাম করে বেঁধেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কেও৷ তিনি বলেন, সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায়ের জমানায় ডিসট্রিক্ট প্রাইমারি স্কুল কাউন্সিল (ডিপিএসসি) তৈরি হয়েছিল৷ বাম আমলেও তা বগাল ছিল৷ ডিপিএসসি-তে শিক্ষকরা, অভিভাবকরাও ভোট দিতেন৷ কোন জেলায় প্রাইমারিতে কত শূন্যপদ রয়েছে, তার নিরিখে সেই জেলার মানুষ যাতে সুযোগ পায়, তা নিশ্চিত করতে ডিপিএসসি তৈরি করা হয়েছিল৷ ২০১৩ সালে ব্রাত্য বসুর সময় পর্যন্তও এই নিয়ম বহাল ছিল৷ কিন্তু শিল্প ডুবিয়ে একজন শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পরই এই নিয়ম বদলে যায়৷ ডিপিএসসি তুলে দেওয়া হয়৷ তাঁর একটাই উদ্দেশ্য ছিল, সবটা দক্ষিণ কলকাতার হরিশ চ্যাটার্জী স্ট্রিটে নিয়ে যাওয়া৷
শুভেন্দু বলেন, ‘‘এখন এক জেলার ছেলে অন্য জেলায় চাকরি করবে৷ কারণ ঘরের ছেলের কাছ থেকে তো ১২-১৫ লাখ নেওয়া যাবে না৷ দূরের ছেলের কাছ থেকে সেটা নেওয়া সম্ভব৷ সে কারণেই পুরুলিয়ার শূন্যপদগুলিতে মেদিনীপুর বা হাওড়ার লোকেদের নিয়োগ করা হয়েছে৷ ডিপিএসসি-র ক্ষমতা ২০১৪ সালে তুলে দিয়েছে এই সরকার৷ এর উত্তর তৃণমূল কংগ্রেস ও শিক্ষা দফতরকে দিতে হবে৷
আরও পড়ুন- মেট্রো ডেয়ারির শেয়ার হস্তান্তরে ‘দুর্নীতি’র অভিযোগ! বেহালায় ইডির হানা
এত দিনেও কেন সাঁওতালি ভাষায় সিলেবাস চালু হল না এদিন সেই প্রশ্নও ছোড়েন শুভেন্দু৷ তিনি বলেন, ২০০৩ সালে সাঁওতালি ভাষাকে অষ্টম তফশিলে এনেছিলেন বিজেপি’র প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী৷ শাসক দল বলছে সাঁওতালি ভাষায় সিলেবাস চালু হয়ে গিয়েছে৷ কোথায় সিলেবাস? কোথায় শিক্ষক শিক্ষিকা? হাই স্কুলে-কলেজে কোথাও সাঁওতালি ভাষায় পঠন-পাঠনের পরিকাঠামো নেই৷ কোনও প্রশ্ন উঠলেই বলা হচ্ছে হাজার টাকার ভাতা৷ কী হয় হাজার টাকায়? সুর চড়ান শুভেন্দু অধিকারি৷