কলকাতা: পুজোতে সব দিনই চাইলে মদের দোকান খোলা থাকতে পারে। ২০১৬ সাল থেকে এই নিয়মই চালু করেছে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ আগে দুর্গাপুজোর সময়ে যে অষ্টমীতে গোটা দিন এবং দশমীতে বিকেল ৫টার পরে, এই দেড় দিন বন্ধ থাকত রাজ্যের সব মদের দোকান, তা এখন তার বাধ্যবাধকতা নেই। যদিও খুচরো বিক্রেতাদের একাংশের দাবি ছিল, কর্মচারিদের ছুটির দিকটাও ভাবা হোক। সেই ইস্যুতে বিশেষ নির্দেশ ইতিমধ্যেই দিয়েছে সরকার। সেই মতো কোনও মদবিক্রেতা চাইলে দুর্গাপুজোর অষ্টমী এবং দশমীর দিন দোকান বন্ধ রাখতে পারেন। তবে পুরোটাই নির্ভর করতে তার ইচ্ছার ওপর। এই ইস্যুতেই রাজ্য সরকারকে তুলোধনা করেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
আজ বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশনের ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই মতোই দলে দলে অধিকাংশ বিধায়করা উপস্থিত হয়েছেন বিধানসভায়। তাদের মধ্যে ছিলেন বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীও। আজকের দিনে বিধানসভায় ডাকার বিষয়টি নিয়েও তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এই সূত্র ধরেই শুভেন্দু অষ্টমীর দিন মদের দোকান খোলা ইস্যু নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। তাঁর কথায়, স্বাধীনতার পর অষ্টমীতে প্রথম মদের দোকান খোলা। এবারের অষ্টমীতে প্রথম মদের দোকান খোলা হবে। ব্রিটিশরাও অষ্টমীদের দিন মদের দোকান বন্ধ রাখত। কারণ এই দিন নিরামিষ খান সকলেই। কিন্তু চলতি বছর রাজ্য সরকার তা করছে না। এছাড়া শুভেন্দু নবরাত্রি ইস্যুতেও সরকারকে একহাত নিয়ে বলেন, আজ নবরাত্রির দ্বিতীয়া, এদিনই সকলকে বিধানসভায় ডেকে আনা হয়েছে। এদিন দুপুরে অনেকেই উপোষ করেন। অন্যদিকে, পিতৃপক্ষে পুজো উদ্বোধন করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, এইভাবে বাঙালি এবং হিন্দুদের আঘাত করা হচ্ছে।
রাজ্য সরকারের মদের দোকান খোলার ইস্যু নিয়ে সব মহলেই আলোচনা চলছে। আসলে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতি বৃহস্পতিবার রাজ্যের সব মদের দোকান ‘ড্রাই ডে’ হিসাবে বন্ধ থাকত। এখন অবশ্য সেই নিয়মও নেই। বর্তমানে প্রজাতন্ত্র দিবস, দোলযাত্রা, স্বাধীনতা দিবস, মহরম এবং গান্ধীজয়ন্তী, এই পাঁচ দিনই রাজ্যে মদের দোকান সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে। আর পুজোতে মদের দোকান বন্ধ ইস্যুতে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, পুজোয় মদের দোকান বন্ধ রাখতে গেলে তা এলাকা ভিত্তিক সুবিধা অনুযায়ী বন্ধ রাখতে হবে। দোকান বন্ধ রাখতে ইচ্ছুক বিক্রেতাদের আবেদন করতে হবে জেলা আবগারি দফতরের কাছে। তারাই এলাকা বিবেচনা করে এক বা দু’দিন দোকান বন্ধ রাখার অনুমতি দেবে।