কলকাতা: আরামবাগে বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে সম্প্রতি গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে কার্যত জলে নেমে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেন তিনি এবং একই সঙ্গে দুর্গত মানুষদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। পুজোর মুখে প্লাবিত রাজ্যের একাধিক জেলা। মুখ্যমন্ত্রী এই ইস্যুতে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন ডিভিসির দিকেই। দাবি করা হয়েছে, তাদের ছাড়া জলের কারণেই বানভাসি হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। যদিও এই ইস্যুতেও মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছেন রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, বাঁধ মেরামতি হয়নি। দোষ রাজ্যের।
মমতার আরামবাগের সফরকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, তিনি (পড়ুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ওখানে গিয়েছিলেন শুধু ছবি তুলতে, ছবি তুলে চলে এসেছেন, কোনও মিটিং পর্যন্ত করেননি। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী অকারণে ডিভিসিকে দোষ দিচ্ছেন কিন্তু এখানে তাদের কোনও দোষ নেই। তারা জল ছাড়ার তিন দিন আগে জানিয়েছিল নিয়ম মত। আর ডিভিসি জল ছাড়লে নদী বাঁধ উপচে যায়। কিন্তু এবার বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে। তাই দোষ রাজ্যের কারণ বাঁধ মেরামতিই হয়নি। এই প্রেক্ষিতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করে শুভেন্দুর বক্তব্য, তিনি খালি ভাতা আর ভোট নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। বন্যা পরিস্থিতি দেখার সময় হয়নি তাঁর। বিরোধী নেতার আরও দাবি, এই বন্যা পরিস্থিতি পুরোটাই হয়েছে সেচ দফতরের গাফিলতিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই সময় সেচ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন।
উল্লেখ্য, আরামবাগে গিয়ে সরাসরি ডিভিসিকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গতবার যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তখন ডিভিসি ১ লক্ষ ১২ হাজার কিউসেক মত জল ছেড়েছিল, কিন্তু এবার প্রায় সাড়ে ৫ লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। একদিকে বৃষ্টি, অন্যদিকে এত পরিমাণ জল ছাড়ার কারণে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়েছে। তিনি বলেছেন, জল না নামতেই আরও জল ছাড়া হয়েছে। মমতার আরও দাবি, এই জল ছাড়ার কারণে ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে ৮ টি জেলা। হাওড়া, হুগলী থেকে শুরু করে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, দুই বর্ধমান জেলা প্লাবিত হয়েছে, কমপক্ষে ১ লক্ষ বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৪ লক্ষ মানুষকে অন্যত্র সরানো হয়েছে বলে জানান তিনি। বছরে ডিভিসি চারবার করে জল ছাড়ছে বলেও দাবি করেন তিনি। এই প্রেক্ষিতেই মমতার হুঁশিয়ারি, আগামী দিনে হয়ত ডিভিসির থেকে ক্ষতিপূরণ চাইতে হতে পারে তাঁকে।