কলকাতা: ২০১৯। ঠিক দুবছর আগে ছবিটা ছিল সম্পূর্ণ অন্য। লোকসভা নির্বাচনের সময় বিষ্ণুপুরে স্বামী সৌমিত্র খাঁর হয়ে তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকদের বিরুদ্ধে একাই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন সুজাতা মণ্ডল খাঁ। প্রচণ্ড উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় তাঁর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকরা এবং চলে স্লোগান-পাল্টা স্লোগানের খেলা। তবে সেই সময়ে পেরিয়ে গিয়ে এখন পরিস্থিতি বদলে গিয়েছে সম্পূর্ণ। এখন সুজাতা তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। আর দল বদল করার পর এদিন তাঁকেই হেরে গেল বিজেপি কর্মী এবং সমর্থকরা। দুই বছরের দুই ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল, তবে মধ্যমণি সেই একজন, সুজাতা মণ্ডল খাঁ।
লোকসভা নির্বাচনের সময়ে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বড়জোড়া ব্লকের এক বুথে ভোট দিতে এসে, সুজাতা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে উত্তেজক কথাবার্তা বলতে থাকেন। সেই সময় তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকরা। একদিক থেকে উঠতে থাকে বন্দেমাতারাম স্লোগান, অন্যদিক থেকে সুজাতা দিতে থাকেন জয় শ্রীরাম স্লোগান। সেই সময়ে নিজের স্বামীর হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ওই কেন্দ্রে একা দায়িত্ব নিয়ে লড়ছিলেন সুজাতা। তবে আজ, ২০২১ সালে দাঁড়িয়ে তিনি তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী। স্বামী সৌমিত্রের সঙ্গে এখন অনেকটাই দূরত্ব হয়ে গিয়েছে তাঁর। এদিন আবার তাঁকে আক্রমণ করা হয় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের পক্ষ থেকে। গোটা ঘটনায় সৌমিত্র তৃণমূলের ওপর দায় চাপিয়েছেন, যদিও স্ত্রীর আক্রান্ত হওয়ার ব্যাপারে কোনো কথা বলেননি। এই প্রেক্ষিতে তাঁকে পাল্টা আক্রমণ করতে হয়েছে সুজাতাকে। সব মিলিয়ে এই দুটো বছরে স্বামী-স্ত্রীও একে অপরের থেকে অনেকটা দূরে সরে গিয়েছেন।
এদিন আরামবাগে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডলের নিরাপত্তারক্ষীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ শুরু করেন তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা। অভিযোগ, “সকাল থেকে খবর পাচ্ছিলাম আরান্ডির ২৬৩ নম্বর বুথ এলাকায় যে সংখ্যালঘু ভোটাররা আছেন তাদের ভয় দেখিয়ে ভোট দিতে দেওয়া হচ্ছে না। তারা বহুবার বাড়ি থেকে ভোট দিতে এসেও ভোট না দিয়েই ফিরে গিয়েছেন। আমি সেখানে যাই পরিস্থিতি দেখতে। কিন্তু সেখানে আমাদের মারধর করা হয়। আমার নিরাপত্তারক্ষীকে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাকেও প্রচন্ডভাবে মেরেছে। বাঁশ, লাঠি, অধরা ইট দিয়ে এলোপাথারি মেরে মাথা ফুলিয়ে দিয়েছে। আমাকে প্রাণে মারার চক্রান্ত করছে বিজেপি। আমার সামনেই বলছে, এই শালীকে মেরে দে।”