নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: রাজভবনে আসার পর থেকতে জগদীপ ধনকরের সঙ্গে সংঘাত অব্যাহত নবান্নের। এবার রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হলেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করছেন বলেও অভিযোগ করলেন সুজন চক্রবর্তী।
দিন কয়েক আগেই দিল্লি ঘুরে গিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যের একাধিক বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে সূত্রের খবর। বৈঠকের পর সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যপাল অভিযোগ করেন, পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক হিংসা ক্রমশ বেড়ে চলেছে এবং তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে পুলিশ এবং প্রশাসনের একাংশ। একইসঙ্গে রাজ্য়পালের অভিযোগ, গণতন্ত্রের চজূড়ান্ত অপমান হচ্ছে বাংলায়। রাজ্যপালের বক্তব্যকে গুরুত্ব না দিলেও, তিনি বিজেপির মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছেন বলে অভিযোগ তোলে তৃণমূল কংগ্রেস। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে নয়, তিনি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলতেই দিল্লি গিয়েছেন বলে দাবি করেন শাসকদলের নেতারা। এবার রাজ্যপালের সমালোচনায় মুখর হলেন বাম পরিষদীয় দলনেতা তথা সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী।
বারাসতের নায্য মূলের সব্জি বিক্রয় ও শ্রমজীবী ক্যান্টিনে গিয়ে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিরোধী থাকার সময় থেকে রাজ্যপালকে রাজনৈতিক ক্রীড়নকে পরিণত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস”। তাঁর মতে, দেশের ভবিষ্যত বামেরাই। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ছবি প্রকাশ করা থেকে শুরু করে বর্তমানে রাজ্যপালের বিভিন্ন কাজের সমালোচনা করেন তিনি। এদিন সুজন চক্রবর্তী বলেন, “দায়িত্ব নিয়ে বিজেপির উত্থানে সাহায্য করেছে তৃণমূল কংগ্রেস?’’
পুজোর আগে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা প্রসঙ্গে রাজ্যপাল দিল্লিতে বলেন, “রাজ্যে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে আল কায়েদা। অনেকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বোম তৈরির কারখানা চলছে, সব জায়গাতেই অবাধে বোমা সরবরাহ করা হচ্ছে, অ্যাম্বল্যান্সে বোমা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরা কী করছে?” রাজ্য পুলিশের ডিজিকে চিঠি দেওয়া হলেও মাত্র দুলাইনে তার উত্তর দেওয়া হয়েছে, এবং সঠিক উত্তর জানতে ফের একবার চিঠি পাঠানো হয় বলেও দাবি করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। রাজ্যপালের অভিযোগ, আইনের শাসন এবং সাংবিধানিক বাধ্যবাধ্যকতার কোনও জায়গা নেই রাজ্যে। তিনি বলেন., “রাজনৈতিক হানাহানি বেড়েই চলেছে, সীমাহীনভাবে চলছে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা, চলছে ব্যাপক হত্যালীলা৷”
আমলা এবং পুলিশ প্রশসাসনের একাংশ তাঁদের নিজের কর্তব্যকে অবহেলা করে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করেছে চলেছে এবং রাজনৈতিক কাজে লিপ্ত হচ্ছে বলেও এদিন করেন রাজ্যপাল। রাজ্য প্রশাসন এবং পুলিশের মধ্যে রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে যা রাজ্যের সাংবিদানিক ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মত প্রকাশ করেন জগদীপ ধনকর। বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসনের পক্ষেও সওয়াল করেছেন রাজ্যপাল। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ। প্রকাশ্যে রাজ্যপালের মতের সমালোচনা করেছে কংগ্রেসও। এবার সমালোচনায় মুখর হলেন সিপিআইএমের এই বর্ষীয়ান নেতা।