কলকাতা: বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেই নিয়েই আলোচনা করছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। খেতে চেয়েছিলেন চপ, মুড়ি, চাউমিন। বাড়ি ফিরে কোন কাজ করবেন সেও একপ্রকার ভেবে নিয়েছিলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী। এই সব নিয়ে আলোচনা করতে করতেই তিনি যান শৌচালয়ে। সেখান থেকে ফিরে আসার পর কয়েক মিনিটেই সব শেষ। এই ছিল মৃত্যুর আগে সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের শেষ কয়েক প্রহর।
শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে পরীক্ষা করাতে আসার পর সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। পরবর্তী ক্ষেত্রে শারীরিক অবস্থার কিছুটা অবনতি হলেও সামগ্রিকভাবে তিনি ছিলেন স্থিতিশীল। সব ঠিক থাকলে হয়তো আজ বাড়ি ফিরতেন। কিন্তু শেষটা ভালো হল না। বাড়ি ফিরে কী কী করতে চান, কী খেতে চান সব নিয়েই স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, অসুস্থ অবস্থাতেই হাসপাতালে কাজ সেরেছিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু গতকাল সন্ধ্যেবেলা স্ত্রী এবং আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার পর শৌচালয় যাওয়ার কয়েক মিনিটেই সব যেন পাল্টে গেল।
শৌচালয় থেকে ফিরে এসেই তিনি জানিয়েছিলেন যে তাঁর কিছুটা অস্বস্তি হচ্ছে। কিছুক্ষণ পরেই বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি এবং বেডে কার্যত শুয়ে পড়েন। ততক্ষণে হয়তো যা হওয়ার হয়ে গিয়েছিল। সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে ওই অবস্থায় দেখে তৎক্ষণাৎ ডাক্তারদের ডাকা হয়। সঙ্গে সঙ্গে ছুটে আসেন জুনিয়র ডাক্তার আর নার্সরা। বুকে অন্তত ৩০ থেকে ৪০ মিনিট পাম্প করা হয় কিন্তু কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তী ক্ষেত্রে উডবার্নের কার্ডিওলজি বিভাগের আইসিউয়ে হয়ে তাঁকে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে আসেন মেডিকেল বোর্ডের পাঁচ জন সদস্য এবং হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। কিন্তু কিছুই কাজে আসেনি। জানা গিয়েছে, গতকাল বিকেল এর পরেই মন্ত্রীর সিটি স্ক্যান করা হয়েছিল কিন্তু সেখানে কোনো গোল মাল পাওয়া যায়নি। কিন্তু হঠাৎ করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এইভাবে শারীরিক অবস্থার অবনতি কী করে ঘটল তা এখনো বুঝে উঠতে পারছেন না চিকিৎসকরা।