জেরা করতে গিয়ে অসুস্থ, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন সাব-ইনস্পেক্টর

জেরা করতে গিয়ে অসুস্থ, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেলেন সাব-ইনস্পেক্টর

কলকাতা:  মেজাজ বরাবরই কড়া তাঁর৷ কিন্তু মনটা ছিল বড্ড নরম৷ তাই পাঁচ বছরের একটা বাচ্চা মেয়ের অপহরণের মামলার উতলা হয়ে উঠেছিলেন সাব-ইন্সপেক্টর আফতাব আহমেদ৷ চোখের সামনে ভেসে উঠেছিল নিজের মেয়ের মুখখানি৷ তাঁর মেয়েও যে এই বয়সেরই৷ তাই এই মামলাটি ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিয়ে তদন্ত করছিলেন অফিসার৷ 

আরও পড়ুন- যৌন হেনস্থা মামলায় গ্রেফতারি এড়াতে হাই কোর্টে কৈলাস সহ ৩ বিজেপি নেতা

দিন রাত তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্তদের নাগালও পেয়ে যান তিনি৷ মঙ্গলবার ধরা পড়ে দোষী৷ সে নিজের অপরাধও কবুল করে নেয়৷ কিন্তু তখনও মেয়েটার খোঁজ মেলেনি৷ অভিযুক্তকে হাতে পেলেও তাঁর মুখ থেকে বাচ্চা মেয়েটার খোঁজ না পেয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছিলেন তিনি৷ জেরা করার সময় তিনি অত্যন্ত উত্তেজিত হয়ে পড়েন৷ দরদর করে ঘামতে থাকেন সাব-ইন্সপেক্টর আফতাব আহমেদ৷ জেরা করতে করতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি৷ সহকর্মীরা তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান৷ কিন্তু শেষরক্ষা আর হল না৷ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান উল্টোডাঙ্গা থানার সাব-ইন্সপেক্টর ৪১ বছরের আফতাব আহমেদ৷ এই ঘটনায় শোকের ছায়া পুলিশ মহলে৷ 

গত শুক্রবার উল্টোডাঙ্গা থানা এলাকার বাসিন্দা বছর পাঁচেকের একটি শিশু নিখোঁজ হয়ে যায়৷ থানায় অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে শিশুটির পরিবার। মামলাটি হাতে নেন উল্টোডাঙ্গা থানার সাব-ইন্সপেক্টর আফতাব আহমেদ। তবে থেকে এক মুহূর্তও হাত গুটিয়ে বসে থাকেননি তিনি৷ ক্রমাগত খোঁজ চালিয়ে গিয়েছেন অপরাধীদের৷ কেসটিকে নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেছেন৷ সহকর্মীদের কথায়, আফতাব স্যারের নিজের ওই বয়সী একটা মেয়ে রয়েছে৷ তাই এই কেসটি হাতে পাওয়ার পরেই তিনি কেমন যেন হয়ে গিয়েছিলেন৷ সবসময় এই কেসটি নিয়েই ভাবছিলেন৷ বেশ কয়েকবার অসুস্থও বোধ করেন তিনি৷ কিন্তু গুরুত্ব দেননি৷  মেয়েটিকে খুঁজে বার করাই তাঁর লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায়৷ মঙ্গলবার অপরাধীদের নাগালও পেয়ে যান তিনি৷ কিন্তু শেষ পর্যন্ত শিশুটির খোঁজ আর পাননি তিনি৷ 

জেরা করার সময়েই অসুস্থ হয়ে পড়েন অফিসার৷ তাঁকে ও ভাবে ঘামতে দেখে ভালো বোধ করেননি ওসি৷ আফতাব জানান তিনি অসুস্থ বোধ করছেন৷ ওসি নিজে তড়িঘড়ি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান৷ চিকিৎসকরা জানান চিন্তার কারণ নেই৷ তবে আপাতত তাঁকে অবজারভেশনে রাখতে হবে৷ কিন্তু রাতে একাধিকবার হৃদরোগে আক্রান্ত হন আফতাব আনসারি৷ ভোর ৪টে ২০ নাগাদ থেমে যায় তাঁর নিঃশ্বাস৷ 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − 4 =