ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়! জয়েন্ট পরীক্ষা দিতে ৭৫ কিমি সাইকেল চালিয়ে এল পরীক্ষার্থী

নৌকায় বিদ্যাধরী নদী পার হওয়ার পর টানা চার ঘণ্টা সাইকেল চালান দুজনে। রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পিয়ালি গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঢোকেন। সকাল হলে একটাই সাইকেল নিয়ে বেরয় দুজন। এবার চালক বাবা এবং পেছনে বই হাতে দিগন্ত। পরীক্ষার পড়া শেষ মুহূর্তে ঝালিয়ে নিতেই হত তাকে। 

কলকাতা: পরীক্ষাকেন্দ্র বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ কিমি দূরে। করোনা পরিস্থিতিতে যোগাযোগ ব্যবস্থার হাল যে খারাপ তা সবার জানা। তাই সময়মতো পৌঁছতে ৭৫ কিমি সাইকেলেই পাড়ি দিল এই পরীক্ষার্থী। শুধু সেই নয়, সঙ্গে ছিলেন পড়ুয়ার বাবাও। জানা গেছে, জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিতে গোসাবা থেকে সল্টলেক আসতে গিয়ে এতটা পথ সাইকেল চালাতে হয়েছে এই দু’জনকে। 

সুন্দরবনের গোসাবার বাসিন্দা দিগন্ত মণ্ডল। জয়েন্টের পরীক্ষায় তার সিট পড়েছে সল্টলেক সেক্টর ফাইভে। এই সময় শহর এবং শহরতলিতে যদি বা বাস চলে, গ্রামের দিকে সেই অবস্থাও নেই। অগত্যা মঙ্গলবার সন্ধে নাগাদ বাবা-ছেলে দুটি সাইকেলে রওনা দেয়। নৌকায় বিদ্যাধরী নদী পার হওয়ার পর টানা চার ঘণ্টা সাইকেল চালান দুজনে। রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার পিয়ালি গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঢোকেন। সকাল হলে এবার একটাই সাইকেল নিয়ে বেরয় দুজন। এবার চালক বাবা এবং পেছনে বই হাতে দিগন্ত। পরীক্ষার পড়া শেষ মুহূর্তে ঝালিয়ে নিতেই হত তাকে। 

সকাল ৯টা নাগাদ সোনারপুর এসে সাইকেল ছাড়েন দু’জনে। অটো ধরে গড়িয়া এবং তারপর দুটো বাস বদলে ১১টা নাগাদ পরীক্ষা কেন্দ্রে হাজির হয়। এত কষ্ট করে পরীক্ষা দিতে যাওয়া নিয়ে দিগন্ত জানিয়েছে, ‘ট্রেন চললে এত কষ্ট হত না। কিন্তু দু’বছর ধরে এই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি, কোনওভাবেই মিস করা যেত না।’ ছেলের এই দৃঢ় সংকল্পে সঙ্গী বাবা কী বলছেন? তাঁর কথায়, ‘ছেলের দৃঢ়তাই আমার মনে জোর এনে দিয়েছে। তাই এতটা রাস্তা সাইকেল চালাতে কষ্ট হয়নি। আমার শুধু সংক্রমণের ভয়টাই ছিল।’ এই ঘটনা শুনে মনে হতেই পারে, ‘ধন্যি ছেলের অধ্যবসায়।’      
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 + 4 =