কলকাতা: সালটা ২০১২, তখন বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম দফার সরকার। আর এই ন’বছর আগে ‘দুস্টু লোক? ভ্যানিশ!’ কার্টুন মামলায় তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলেছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র। তখন এই কার্টুন ফরোয়ার্ড করার ঘটনায় গ্রেফতার করে শ্রীঘরের মুখ অব্দি দেখতে হয়েছিল এই অধ্যাপককে। দায়ের হয়েছিল মামলা, যার জেরে অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রকে আজও হাজিরা দিতে হয় নিয়মিত। কিন্তু এতদিন পর এই ‘কার্টুন কাণ্ড’ ফের কেন চর্চায়?
ন’বছর আগে ‘দুস্টু লোক? ভ্যানিশ!’ নামক একটি কার্টুন ফরোয়ার্ড করে রাজনৈতিক চর্চায় আসেন অম্বিকেশ মহাপাত্র। উল্লিখিত এই কার্টুনে ছিল তৎকালীন ৩ তৃণমূল হেভিওয়েট-মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুকুল রায় ও দীনেশ দ্বিবেদীর মুখ। এই কার্টুন ফরোয়ার্ড করার পর তখন তৃণমূল তরফে নিগ্রহিত হন এই অধ্যাপক৷ পরে পুলিশি হেফাজতে নিয়ে তাকে হেনস্থা করার অভিযোগও শোনা গিয়েছিল তখন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই কার্টুন নিয়ে দাবি করেছিলেন, “এই কার্টুনে ব্যবহৃত ‘ভ্যানিশ’ কথার মাধ্যমে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। এটি একটি সাইবার ক্রাইম৷”
এরপর বহুকাল অতিবাহিত হয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হয়েছেন মুকুল রায় এবং সম্প্রতি তৃণমূলে ‘দম বন্ধ’ হওয়ার কারণ জানিয়ে রাজ্যসভার সদস্যপদ ছেড়েছেন দীনেশ দ্বিবেদী। কিন্তু তারপরেও অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্র’র মামলা চলছে আদালতে৷ এই প্রসঙ্গে অধ্যাপক নিজে অভিযোগ তুলেছেন, “কার্টুনে ব্যবহৃত এক মুখ এখন বিজেপিতে। একজন রাজ্যসভা থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাহলে কি এই পরিস্থিতিতে তথ্যপ্রযুক্তি আইন কি ভ্যানিশ হয়ে গিয়েছে? এখনও আমাকে এই মামলায় হাজিরা দিতে হয়। রাজ্য সরকারের অবস্থানটা ঠিক কী জানতে চাই৷”
এই প্রসঙ্গে এবার সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য এই বিষয়ে তৃণমূলকে মামলা প্রত্যাহার করার ও অধ্যাপকের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তুলেছেন। যদিও মামলা অবস্থান থেকে এখনও অনড় তৃণমূল। ন’বছর পর হঠাৎ সক্রিয় হয়ে ওঠা ইস্যু নিয়ে তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কেউ দল ছেড়ে চলে গেলেই মামলা উঠে যায় না। যিনি অপরাধ করেছেন তাঁর মামলা থাকে। আইন আইনের পথে চলবে৷” নির্বাচনের আগে ফের ‘পুরানো কাসুন্দি’ ফের অস্বস্তিতে ফেলতে পারে শাসক দলকে, এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল৷