নয়াদিল্লি: দেশে গণতন্ত্র তখনই প্রকৃত অর্থে কার্যকরী বলে মনে করা যায় যখন বিরোধীতা শক্তিশালী হয়। দেশের বর্তমান সামগ্রিক পরিস্থিতিতে সরকারের স্বেচ্ছাচারিতা রুখতে দেশের বিরোধী দলগুলির উদ্দেশ্যে এমনই বার্তা দিলেন সম্প্রতি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ ব্যানার্জি।
জয়পুর লিটারেচার ফেস্টিভ্যালে একাধিক বিষয়ে আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশের নানান সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন উপযুক্ত বিরোধিতার অভাবেই দেশের সরকার স্বেচ্ছাচারী হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। দেশের বিরোধী দলগুলি ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থেকে নিজেদের বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের জোটবদ্ধতার অভাবেই বিরোধিতা দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং বর্তমান সরকারের ওপর সেই অর্থে চাপ সৃষ্টি হচ্ছেনা ফলতঃ সরকার নিজের ইচ্ছে মত একের পর এক পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। যা ভারতের মতো গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অত্যন্ত দুর্দিনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
এদিন দেশের অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন দারিদ্রতাই ভারতের পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থ সবক্ষেত্রেই দারিদ্রতা দেশের উন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তবে বর্তমানে দেশে দারিদ্রতার হারের সঙ্গে বিগত ৩০ বছরের তুলনা করে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ যা বললেন তা দেশের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক দুরবস্থার নিরিখে সেই অর্থে মোদি সরকারের প্রশংসায় না হলেও বিরোধীদের কিন্তু হতাশ করবে। অভিজিৎ ব্যানার্জি বলেন, বিগত ৩০ বছরের অনুপাতে ভারতে দারিদ্রতার হার অনেকটাই কমেছে যদিও তিনি বলেন বিগত দু'মাসে দেশের অর্থনৈতিক দৈন্যতার কিছুটা হয়েছে তবে এই অবস্থা কতদিন স্থায়ী হবে সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি।
কারণ তার মতে যেখানে দেশের আর্থিক ক্ষেত্র হিসেবে ব্যাংকের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। তিনি বলেন “বর্তমানে সবথেকে বড় স্ট্রেস পয়েন্ট আর্থিক খাত। ব্যাঙ্কিং খাত যা নিয়ে আমাদের চিন্তিত হওয়া উচিত সেই ক্ষেত্রটি যে অত্যন্ত চাপে আছে সে নিয়ে কোন প্রশ্ন থাকতে পারে না। সরকার সত্যিই এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার মতো অবস্থানে নেই, তাই আমরা ক্ষতির দীর্ঘ প্রক্রিয়া সম্পর্কে কথা বলছি, অত্যন্ত ব্যয়বহুল হতে চলেছে।” এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতেএই ক্ষেত্রে সরকারকে তার অংশীদারিত্ব ৫০ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার পরামর্শ দিলেন এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।