কলকাতা: করোনা সংক্রমণের জেরে রাজ্যে সব বাজার বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে গুজব ছড়িয়েছে। যার জেরে অনেক জায়গায় আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ জিনিসপত্র মজুত করা শুরু করেছেন। সক্রিয় হয়ে উঠেছে মজুতদার ফড়ে রাও। এবার পরিস্থিতির হাল ধরতে মাঠে নামলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যে কোন বাজার বন্ধ হচ্ছে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি গুজব সৃষ্টিকারী এবং মজুতদারদের কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘ জেলায় জেলায় বিভিন্ন জায়গায় গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে বাজার বন্ধ হয়ে যাবে। কেউ কেউ মজুত করার চেষ্টা করছেন। এ ধরনের গুজব ছড়ালে এবং মজুত করার চেষ্টা হলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত জিনিস পত্র রয়েছে। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’
তিনি এ দিনের বৈঠকে বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারি এবং বেসরকারি ক্ষেত্রকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘ এই সময় ব্যবসা করার নয়। এখন সহযোগিতার সময়।” ওই বৈঠকে তিনি বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তের কথা জানান।মুখ্যমন্ত্রী জানান, করোনা সন্দেহে হাসপাতালে ভিড় জমানো রোগীদের কথা মাথায় রেখে বেলেঘাটা আইডিতে বাড়ানো হল শয্যাসংখ্যা। বর্তমানে শয্যাসংখ্যা ২২ থেকে বেড়ে ১০০টি করা হল। আরজি করেও শয্যাসংখ্যা বাড়িয়ে ৫০টি করা হল। বাঙ্গুর হাসপাতালে বেডের সংখ্যা বাড়িয়ে করা হল ১৫০টি। এছাড়াও নতুন করে অত্যাধুনিক একটি পৃথক আইসোলেশন ওয়ার্ডও চালু করা হল। মুখ্যমন্ত্রীর পরামর্শ, “রোগ মোকাবিলায় হাসপাতালে রাখুন ইসিএমও যন্ত্র।”
ইতিমধ্যে এই মেশিন দু’টি রয়েছে এসএসকেএম হাসপাতালে। আরও ১০টি অর্ডার দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এর আগে পোলবার পুলকার দুর্ঘটনায় জখম খুদে পড়ুয়া ঋষভের চিকিৎসাতেও ওই যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। ওই যন্ত্রটি শিশুর ফুসফুসের বিকল্প হিসাবে কাজ করা হয়। যেহেতু করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ফুসফুসে সংক্রমণ হতে পারে। তাই তাঁদের চিকিৎসাতেও এই যন্ত্র কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
করোনা পরিস্থিতিতে অনেক সময়ই অভিযোগ উঠছে অ্যাম্বুল্যান্স পাচ্ছেন না রোগীরা। এই সমস্যা সমাধানে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত এবার থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে কমপক্ষে পাঁচটি করে অ্যাম্বুল্যান্স রাখা থাকবে। যা করোনা সন্দেহভাজনরা ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়াও বিভিন্ন হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লাভস, মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার পাঠানোরও নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাতে সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে কোনও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি না হয় তাই একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রীর একটাই আরজি, “ব্যবসা না করে রোগ মোকাবিলায় এগিয়ে আসুন।”