ক্যানিং: সুপার সাইক্লোন উম্পুনে বিধ্বস্ত দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়াল ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’ (STEA)৷ শুক্রবার ঝড় বৃষ্টির মধ্যেই কুলতলীর গোলাপগঞ্জ এলাকায় পৌঁছন তাঁরা৷ উম্পুন বিধ্বস্ত মানুষের হাতে তুলে দেন ত্রাণ সামগ্রী৷
STEA-র সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনও সংকটের মধ্যে পড়া বিপর্যস্ত মানুষের পাশে সবসময়ই দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছে আমাদের শিক্ষক সমিতি৷ সাধ্য মতো সামান্য সাহায্য নিয়েও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই আমরা৷ করোনা পরিস্থিতিতেও অর্থ সংগ্রহ করে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সাহায্য করেছি৷ পাশাপাশি সমিতির তরফ থেকেও বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছে৷’’ তিনি আরও বলেন, উম্পুনে ভয়ঙ্কর ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উত্তর ২৪ পরগণা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা এবং পূর্ব মেদিনীপুর৷ এই সংকটে সমিতিগত ভাবে শিক্ষকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে এই তিন জেলার মানুষের কাছে তাঁদের চাহিদা মতো ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷
এদিন ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি’র দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে গোপালগঞ্জ এলাকায় ত্রাণ তুলে দেওয়া হয়৷ ত্রাণ বিতরণের সময় বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘এখানকার মানুষ অত্যন্ত কষ্ট করে, লড়াই করে বেঁচে আছেন৷ আপনাদের লড়াইয়ের সঙ্গে আমরাও আছি৷’’
করোনা সংকটের মধ্যেই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় উম্পুনের ধ্বংসলীলা পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে৷ দক্ষিণ ২৪ পরগণার উপকূলবর্তী এলাকায় হাজার হাজার কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে৷ হাজার হাজার গাছ উপড়ে গিয়েছে৷ নষ্ট হয়ে গিয়েছে মাঠের ফসল৷ ক্ষতিগ্রস্ত পুকুর ও মাছের ভেড়িগুলি৷ ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষ গৃহহীন৷ তার উপর বন্ধ কাজকর্ম৷ ফলে বেঁচে থাকার জন্য ন্যূনতম খাদ্য, বস্ত্রটুকুও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁদের পাশে দাঁড়াল STEA.
এদিন শিক্ষক সংগঠনের তরফে ৫০টি পরিবারের সাহায্যের জন্য পরিবার পিছু ২০ কেজি চুন, ৩ কেজি ব্লিচিং, মশারি, টর্চ, ৫০০ গ্রাম করে সরষের তেল ও ১ কেজি ডিটারজেন্টের প্যাকেট তুলে দেওয়া হয়েছে৷ মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে ঝড়ের তাণ্ডবে মাতলা নদীর বাঁধ ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত কুলতলীর গোপালগঞ্জ (কুলির ট্যাংক) এলাকার অসহায় মানুষদের ত্রাণ বিতরণ করা হয়৷ সারাদিন প্রবল বৃষ্টির মধ্যে কোনক্রমে একটি ত্রিপল খাঁটিয়ে ত্রাণ বিতরণ করা হয়৷ এই গ্রাম এমনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে, ত্রাণ বিতরণের জন্য কোনও বাড়ি বা আটচালা অবশিষ্ট নেই৷
এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ মিত্র, সমিতির জার্নাল সহসম্পাদক ডঃ কানাইলাল দাস, জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার, জেলা সহসম্পাদক অমিত হালদার, বারুইপুর মহকুমা সম্পাদক প্রদ্যুৎ হালদার, ক্যানিং মহকুমা সম্পাদক প্রসেনজিৎ হালদার, সুতপা জানা, রাজকুমার নন্দ সহ জেলা কমিটির অন্যান্য সদস্য বৃন্দ৷ শিক্ষক সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, পরবর্তী সময়ে ত্রাণ বিতরণ হবে গোসবা থানার প্রত্যন্ত বিধ্বস্থ গ্রাম ও পাথরপ্রতিমার গোপালনগর ও রায়দিঘিতে৷