কলকাতা: শুধুমাত্র শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি বা পেশাগত দাবিদাওয়া নিয়ে আন্দোলন নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, বা যে কোনও বিপদে-আপদে, অসহায় বিপর্যস্ত মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে শিক্ষক সংগঠন ‘মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি (STEA)’। আরও একবার উম্পুন বিধ্বস্ত মানুষগুলোর দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন তাঁরা৷
শুক্রবার STEA উত্তর ২৪ পরগনা জেলা কমিটির উদ্যোগে হাসনাবাদ থানার শুলকুনি গ্রামে উম্পুন বিধ্বস্ত ১৬০টি পরিবারের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। বারাসাত থেকে সড়কপথে হাসনাবাদ যাওয়ার পর, সেখান থেকে নদী পথ পেরিয়ে, মোটর ভ্যানে করে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে শুলকুনি গ্রামে পৌঁছান STEA-র সদস্যরা৷
উপস্থিত ছিলেন জেলা কমিটির সম্পাদক শংকর কর্মকার, জেলা কমিটির অন্যতম সদস্য প্রবোধ সরকার এবং শুলকুনি হাইস্কুলের শিক্ষক অঞ্জন বালা। এছাড়া ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছিলেন শিক্ষক অনিমেষ কুণ্ডু, বিমল তরফদার, হিরণময় মণ্ডল প্রমুখরা৷ গ্রামের বিশিষ্ট নাগরিক সঞ্জিত মণ্ডলের ঐকান্তিক সহযোগিতায় ত্রাণ বিতরণ প্রক্রিয়া সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয় বলে জানা গিয়েছে৷ উত্তর ২৪ পরগণা জেলা কমিটির পক্ষ থেকে এদিন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির হাতে সরষের তেল, গামছা, ডাল, টর্চ, বিস্কুটের প্যাকেট ও সাবান তুলে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বেতন বঞ্চনা এবং নিজেদের সম্মান অর্জনের জন্য লড়াই করা বৃহত্তর গ্র্যাজুয়েট টিচার'স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিটিএ)-ও দাঁড়িয়েছে দুর্গতদের পাশে৷ এর আগে করোনা বিরোধী লড়াইয়ে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ৫ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন তাঁরা৷ এরপর বিভিন্ন জেলায় উম্পুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে দাঁড়ায় বিজিটিএ৷
এবার নদীয়া জেলার পক্ষ থেকে রানাঘাটের মুড়াগাছা অঞ্চলের আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলের একশত ছাত্রছাত্রীর হাতে তুলে দেওয়া হল শিক্ষা সামগ্রী৷ পাশাপাশি এলাকার দুঃস্থ পরিবারের মধ্যে ত্রাণ সামগ্রী বিলি করেন বিজিটিএ-র রাজ্য সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচার্য সহ জেলা সভাপতি কার্তিক পোদ্দার, মহকুমা সম্পাদিকা শ্রাবনী দত্ত, মহকুমা কমিটির সদস্য সুবোধ দেবনাথ এবং জেলা সদস্য সুব্রতবাবু ও সুদীপবাবু সহ আরও অনেকে। এদিন ছাত্রছাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় খাতা, পেন, পেনসিল, রবার, কেক, হরলিক্স, ডিম, নুডুলস, বিস্কুট, লাড্ডু, সয়াবিন, মাস্ক, সাবান, ইত্যাদি। অন্যদিকে, উম্পুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর হাতে তুলে দেওয়া হয় একটি করে ত্রিপল ও কিছু খাদ্য সামগ্রী। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সৌরেন ভট্টাচার্য বলেন, “বিজিটিএ এমন এক শিক্ষক সংগঠন যারা গ্র্যাজুয়েট শিক্ষকদের দাবি আদায়ে দৃঢ় ভাবে সংগ্রাম করার পাশাপাশি মানবিক কাজ করে চলেছে। তবে আমাদের দাবি না মানা হলে আমরা অন্য পথে আন্দোলনে নামব।’’