bjp mlas
কলকাতা: কয়েক দিন আগেই বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধায়কদের বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বিজেপির তরফে স্পষ্ট বলা হয় তারা এই বর্ধিত বেতন গ্রহণ করবেন না। যদিও নিয়ম অনুসারে তারা এই বর্ধিত বেতন গ্রহণে বাধ্য। তাই খবর বেরিয়ে আসে যে, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বর্ধিত বেতন ডিএ আন্দোলনে দেবেন। এরপরই শুরু হয় বিরাট বিতর্ক। এই ইস্যুতে এবার স্পষ্ট বার্তা দিল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ সংগঠনের অন্যতম শরিক মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি (STEA)।
এই সংগঠন তাদের বার্তায় জানিয়েছে, সম্প্রতি বিধানসভার বিরোধী দলনেতার তাঁদের মঞ্চে আগমণ এবং তাঁর প্রস্তাব ঘিরে চলমান বিতর্ক সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল। তবে তারা স্পষ্ট করছে, এই প্রস্তাব গ্রহণ তারা গ্রহণ করবে না। সংগঠনের বক্তব্য, এই মঞ্চের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল বকেয়া ডিএ, শূন্যপদে স্থায়ী ও স্বচ্ছ নিয়োগ, অস্থায়ীদের স্থায়ীকরণের দাবি নিয়ে। বঙ্গের একটি বড় অংশের সরকারি, আদালত, পৌর-পঞ্চায়েত কর্মচারী থেকে শুরু করে ডাক্তার-নার্স-শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী, অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী অত্যন্ত আবেগের সঙ্গে এই আন্দোলনে নিজেদের যুক্ত করেছিলেন। কিন্তু মঞ্চের কতিপয় নেতৃত্বের শরিক সংগঠনগুলির নেতৃত্বকে উপেক্ষা করে দলীয় রাজনীতির কুশীলবদের অত্যধিক গুরুত্ব দেওয়ায় আন্দোলনের কর্মসূচি ধীরে ধীরে মুখ থুবড়ে পড়তে থাকে। টাকা পয়সা তোলার আকর্ষণ ও তার উপর একচ্ছত্র কর্তৃত্ব কায়েম মূল লক্ষ্য হয়ে ওঠে। এর সঙ্গে যুক্ত হয় স্বৈরাচারী ঔদ্ধত্য ও বিশেষ রাজনৈতিক দলের কাছে নেতৃত্বকে সঁপে দেওয়া। যার দরুণ আন্দোলনের এমন করুণ পরিণতি, বলে মত তাদের।
সংগঠন জানাচ্ছে, বিধানসভার বিরোধী দলনেতা যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা সামনে আসার পর তারাই প্রথম সমিতির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ করেন। বলা হয়, কর্মচারী শিক্ষকরা প্রত্যেকে কমবেশি বেতন পান। তাঁদের দেওয়া চাঁদাতেই মঞ্চ চলছে, চলবে। আরও বেশ কয়েকটি সংগঠন এই প্রতিবাদ জানায়। তাদেরও বক্তব্য, এই টাকা নেওয়া হলে এই আন্দোলন রাজনৈতিক তকমা পেয়ে যাবে। কিন্তু এই মঞ্চের অধিকাংশ শরিক মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তারা না কোনও সভায় যোগদান করে, না কোনও কর্মসূচিতে সক্রিয়তা দেখায়। তাই তারা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তারা মনে করছে, একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের মতাদর্শের পায়ে মঞ্চ আত্মসমর্পণ করছে যা পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক, কর্মচারীরা মানতে পারবেন না।
মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি আরও বলছে, দীর্ঘ ৫৩ বছর ধরে পশ্চিমবাংলার মাধ্যমিক শিক্ষকদের নিয়ে অরাজনৈতিকভাবে ধারাবাহিক আন্দোলন পরিচালনার অভিজ্ঞতা থেকে তারা ইতিপূর্বে একের পর এক প্রস্তাব দিয়েছে। তারাই একমাত্র সমিতি যারা রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সর্ববৃহৎ শিক্ষা আন্দোলন ও সর্বোচ্চ পর্যায়ের আইনি লড়াই লড়ছে। তাই পশ্চিমবঙ্গের সংগ্রামী কর্মচারী শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের আবেগের প্রতি যে দুরাচার করা হচ্ছে, তাকে তারা ধিক্কার জানাচ্ছে।