কলকাতা: প্রথম দফা ভোটের পর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেন বাম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। সোমবার সন্ধ্যায় বর্ষীয়ান নেতা বাড়ি থেকেই চলতি বিধানসভা নির্বাচনে লাল ঝান্ডার বাহকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিবৃতি দিলেন। বিবৃতির ছত্রে ছত্রে তৃণমূল সরকারের ১০ বছরের দৌরাত্ম্য তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, “গত এক দশকে পশ্চিমবঙ্গ সব দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়েছে। যুবদের কাজের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেছে, শিক্ষাঙ্গন কুলষিত, স্বাস্থ্যপরিসেবা গরিব মানুষের নাগালের বাইরে-কার্যত ভেঙে পড়েছে।”
বিবৃতিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্য বলেছেন, “বর্তমান সরকারের হাতে গত দশ বছরে কৃষিতে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। উল্লেখযোগ্য কোনও শিল্প আসেনি গত ১০ বছরে। নন্দীগ্রাম ও সিঙ্গুরে এখন শ্মশানের নীরবতা। সেই সময়ের কুটিল চিত্রনাট্যের চক্রান্তকারীরা আজ দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে কাদা ছোঁড়াছুড়ি করছে। কর্মসংস্থানের সুযোগ হারিয়েছেন বাংলার যুব সমাজ। সরকারি ক্ষেত্রে কোনও নিয়োগ নেই।”
তৃণমূল সরকারকে সরাসরি ‘দুর্নীতি-তোলাবাজি-সিন্ডিকেটরাজ’এর অভিযোগ দিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “রাজ্যবাসীর জীবনধারণ দুর্বিষহ করে তুলেছে এই সরকার। মহিলাদের নিরাপত্তা, সম্ভ্রম, আত্মনির্ভরতা সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্যে আজ বিপন্ন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির যে পরিবেশ পশ্চিমবঙ্গের গর্ব ছিল তাকে বিষাক্ত করে তোলা হয়েছে। একদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের স্বৈরতান্ত্রিক দাপাদাপি, অন্যদিকে বিজেপির বৃহৎ পুঁজির স্বার্থে সর্বনাশা আর্থিক নীতি, বিভেদের রাজনীতি, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ- যার পিছনে রয়েছে আরএসএস এর ভয়ঙ্কর মতাদর্শ।”
বাংলার মানুষ ও তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, “আজ বাংলার মানুষের ঘুরে দাঁড়ানোর সময় এসেছে। নতুন প্রজন্মের হাজার হাজার যুবক-যুবতী ছোট-মাঝারি-বৃহৎ শিল্প ও কর্মসংস্থানের দাবিতে পথে নেমেছে। ওরাই পারবে এই বিপদকে রুখে দিতে। পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট-কংগ্রেস-আইএসএফ স্বৈরতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী জনগণের মোর্চা তৈরি করেছে। এরাই পারবে এই অন্ধকার থেকে রাজ্যকে বের করে আনতে। জনগণের স্বার্থে নতুন সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাই এই শক্তিকে বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী করার জন্য সর্বস্তরের মানুষকে আবেদন জানাচ্ছি।”