কলকাতা: গর্জেও বর্ষাল না! রাজ্য বিধানসভায় ইতিহাস গড়ার ইঙ্গিত দিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷ কিন্তু, যুদ্ধ ঘোষণার ইঙ্গিত দিলেও বিধানসভার অন্দরে রাজ্যের নির্দিষ্ট করা ভাষণের বাইরে একটি শব্দ ব্যবহার করলেন না রাজ্যপাল৷ উল্টে নিজের ভাষণ শেষ করে বিধানসভার অধ্যক্ষের ঘরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে করলেন বৈঠক রাজ্যপাল৷ বিধানসভার বাইরে রাজ্য-রাজ্যপালের সংঘাতের আবহে অধ্যক্ষের ঘরে মুখ্যমন্ত্রী সঙ্গে রাজ্যপালের বৈঠক ঘিরে নতুন করে মাত্রা পেয়েছে বঙ্গ রাজনীতির৷ রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাতে বদলকে স্বাগত জানালেনও বাজেট ভাষণ নিয়ে গট-আপ তত্ত্ব বাম-কংগ্রেসের৷
শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় রাজ্যপালের বাজেট ভাষণের সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্র ও রাজ্যকে কাঠগড়ায় তুলে আক্রমণ করেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী৷ সেখানে রাজ্যের লিখে দেওয়া রাজ্যপালের ভাষণে কেন্দ্র বিরোধী কোনও কথার না থাকার দাবি বাম-কংগ্রেসের৷ ভাষণে যাতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনও কিছু না থাকে, নিশ্চিত করতে রাজ্যকে রাজ্যপাল চাপ দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে বিরোধী বাম-কংগ্রেসের তরফে৷ তাঁদের দাবি, রাজ্যপালের চাপে বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের বিরোধী কোনও কথা বাজেট ভাষণে রাখেনি৷ এলআইসির শেয়ার বিক্রি থেকে বেসরকারিকরণের বিষয়েও কোনও মন্তব্য না করার পিছনে রাজ্য-কেন্দ্রের গট-আপের অভিযোগ বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের৷ সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে মান্নানের খোঁচা, ‘‘উনি কার ভয়ে এত ভীত? ভয় পাবেন না, বলুন আমরাও পাশে দাঁড়াতে পারি৷’’
আজ বিধানসভায় আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কথা বললেও আজ রাজ্যপালর ভাষণে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কোনও কথা নেই কেন? কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কেন কোনও কথা উল্লেখ করা হল না? কেন্দ্রের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে বলেই কি উত্তরবঙ্গের চা বাগান নিয়ে কোনও কথা বলা হল না? কেন এলআইসির শেয়ার বিক্রি থেকে বেসরকারিকরণের বিষয়েও কোনও মন্তব্য করা হল না? সিএএ, এনআরসি নিয়ে যা বলা হয়েছে, তা তো নরেন্দ্র মোদিও বলছেন৷ কেন ভাববাচ্যে বলা হল? সরাসরি বলতে দ্বিধা কোথায়? কেন বলা হচ্ছে না সিএএ চালু করে দেশকে টুকরো করার চক্রান্ত করা হয়েছে? সমালোচনার ধার ধারা হল না কেন? না কি সাপ মরুক লাঠি না ভাঙে এই কৌশল? রাজ্যপালের চাপেই কি এই কাজ৷ তাহলে কি পুরোটা গট-আপ?’’