কলকাতা: ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলায় হাইকোর্টে ধাক্কা খেল রাজ্য৷ হাইকোর্টে খারিজ হয়ে গেল রাজ্যের আবেদন৷ পাঁচ বিচারপতি বৃহত্তর বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয়৷ প্রসঙ্গত, রাজ্যের অবস্থা খতিয়ে দেখে মানবাধিকার কমিশনকে রিপোর্ট দিতে বলেছিল কলকাতা হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ৷ সেই রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে গিয়েছিল রাজ্য৷ সোমবার মামলার শুনানি শুরু হয় এবং রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দেয় পাঁচ বিতারপতির বেঞ্চ৷
আরও পড়ুন- করোনা আক্রান্ত মায়ের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান না করে মানুষের পাশে পরিবার
রাজ্যের আর্জি খারিজের কারণ হিসাবে একাধিক বিষয় তুলে ধরা হয়েছে৷ কলকাতা হাইকোর্টের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে রাজ্য সরকার৷ ভরা এজলাসে এমনটাই মন্তব্য করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল৷ বেঞ্চ জানায়, রাজ্য যে সকল তথ্য দিচ্ছে তা যুক্তিযুক্ত নয়৷ রাজ্য মানবাধিকার কমিশনে কেন একটাও অভিযোগ নথিভুক্ত করা হল না? তবে কি কমিশনের উপরে এই রাজ্যের মানুষের কোনও আস্থা নেই? অথচ রাজ্যের তথ্য অনুযায়ী ৬৪১টি অভিযোগ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে নথিভুক্ত হয়েছে৷ এর থেকেই স্পষ্ট রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের উপরে কোনও আস্থা নেই মানুষের৷
এছাড়াও ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, ‘‘দেড় মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পরেও অভিযোগ আসছে৷ এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ঘরছাড়াদের অভিযোগ জমা নিচ্ছে না৷ যে অভিযোগগুলো ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে তার তদন্ত প্রক্রিয়াও সেই অর্থে কোনও অগ্রগতি নেই। এতে কি রাজ্য প্রশাসনের প্রতি মানুষের আস্থা বাড়বে ? ”
প্রসঙ্গত, ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই রাজ্যে হিংসার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে বিজেপি৷ এই বিষয়ে বিশেষ তৎপরতা দেখিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়৷ রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লির দরবারেও গিয়েছেন তিনি৷ ভোট পরবর্তী হিংসায় ঘরছাড়া মানুষদের ঘরে ফেরাতে গত ৩১ মে একটি কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট৷ তিন সদস্যের সেই কমিটিতে ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং রাজ্যের লিগ্যাল সার্ভিসের আধিকারিক। যদিও এই কমিটির কাজে সন্তুষ্ট নন হাইকোর্ট৷ নতুন একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ শুক্রবার আদালত জানায় রাজ্য লিগাল সির্ভিসেস অথরিটিত সদস্য-সচিবকে নিয়েই এই কমিটি গঠন করা হবে৷