কলকাতা: গোটা দেশজুড়ে তো বটেই পশ্চিমবঙ্গ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে সংক্রমণ। মূলত বিধানসভা নির্বাচনের আবহে রাতারাতি বেড়েছে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার। বিগত কয়েকদিনে যেভাবে জমায়েত হয়েছে এবং করোনা বিধি অমান্য করা হয়েছে তাতে এই বৃদ্ধি স্বাভাবিক বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে আতঙ্কিত হওয়ার মধ্যেও আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন সকলে। কারণ আপাতত দৈনিক সংক্রমণ বেশি হলেও সুস্থতার সংখ্যাও কিন্তু বাড়ছে দিন দিন। সেটা হয়তো আতঙ্কের পরিবেশের জন্য চোখে পড়ছে না কারোর। গতকাল রাজ্যে করোনাভাইরাস থেকে মুক্ত হয়েছেন প্রায় ১৪ হাজার জন।
শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৩ হাজার ৯৩২ জন মানুষ। হ্যাঁ তবে একই সময় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ হাজার ৪১১। মৃত্যু হয়েছে ৯৬ জনের। দৈনিক সংক্রমণ এবং মৃত্যু আপাতত সর্বোচ্চ হলেও শত আতঙ্কের মধ্যেও এটা মানতেই হবে যে সুস্থতার সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সুস্থতার হারও। নবান্নের তরফে যে বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে উল্লেখ রয়েছে, এখনো পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৭ লক্ষ ৩ হাজার ৩৯৮ জন ভাইরাস সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। তবে আপাতত মোট অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ১ লক্ষ ১৩ হাজার ৬২৪ জন। গত দেড়মাসে বিধানসভা নির্বাচনের আবহে রাজ্যে বহু শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ। তাই এই সংখ্যা দেখে আমাদের কারোর অবাক হওয়ার কিছু নেই কারণ এই সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই সাধারণ মানুষের দোষও রয়েছে। ভোটের আবহে যেভাবে রাজনৈতিক জনসভা বেশ করা হয়েছে তা কিন্তু সাধারণ মানুষের জমায়েত ছাড়া কখনোই সম্ভব ছিল না। করোনা বিধি না মেনেই বহু লোক রাজনৈতিক সমাবেশে অংশ নিয়েছেন। তাই বলা যায় এই ভাবে সংক্রমণ বৃদ্ধি অবশ্যই প্রত্যাশিত। যদিও সুস্থতার হার আগের থেকে কমলেও এখনো পর্যন্ত তা ৮৪.৯১ শতাংশ রয়েছে রাজ্যে, যা যথেষ্ট আশা যোগায়।
এদিকে রাজ্যের সংক্রমণের হার আটকানোর জন্য গতকাল বিবৃতি প্রকাশ করে কড়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। অনির্দিষ্টকালের জন্য শহরে বন্ধ শপিং মল, রেস্তরাঁ, বার, সিনেমা হল, স্পা সেন্টার, বিউটি পার্লার সহ একাধিক ‘পাবলিক প্লেস’। বাজার সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৩টে থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। এছাড়া সমস্ত জরুরী পরিষেবা চালু থাকবে, একইসঙ্গে হোম ডেলিভারি পরিষেবা চালু রাখা হবে বলে জানান হয়েছে। অতএব সম্পূর্ণ লকডাউন না হলেও, রাজ্য সরকারের এই নয়া নির্দেশিকায় স্পষ্ট যে আপাতত বাংলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য আংশিক লকডাউন হয়ে গেল।