নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে গোপন জবানবন্দি দেবেন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা? ইঙ্গিত ইডির

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে গোপন জবানবন্দি দেবেন পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা? ইঙ্গিত ইডির

7fa787fa238df12f1706bdaef8edc713

কলকাতা:  শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর হাতে গ্রেফতার পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়৷ বর্তমানে তাঁর ঠিকানা আলিপুর সেন্ট্রাল জেল৷ সেই অর্পিতাই এবার বিচারকের কাছে ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি দিতে পারেন বলে সূত্রের খবর। তবে এই বিষয়ে এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। 

আরও পড়ুন- এক মাস পর বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্থ ‘ঘনিষ্ঠ’ মোনালিসা, বললেন অর্পিতাকে চিনি না, ওড়ালেন অভিযোগ

স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে অর্পিতার দুটি ফ্ল্যাট থেকে নগদ প্রায় ৫০ কোটি টাকা উদ্ধার করেন ইডি-র আধিকারিকরা৷ অর্পিতার জবানবন্দি ঘিরে আইনি আলোচনা শুরু করেছে ইডি। কারণ, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত অর্পিতার স্বীকারোক্তি এই মামলায় কতটা প্রভাব ফেলবে তা জানতেই ইডির লিগ্যাল সেলের আইনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিচ্ছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। যদি লিগ্যাল সেল সম্মতি দেয় এবং অর্পিতার গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে চাপ বাড়বে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের উপর৷ 

ইডি সূত্রে খবর, গত কয়েকদিনে জেল হেফাজতে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য তদন্তকারী অফিসারদের জানিয়েছেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। তাঁর বয়ান শোনার পর ইডির অফিসাররা তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলেন তিনি এই একই কথা সরাসরি বিচারককে বলতে পারবেন কিনা৷ অর্পিতার একবাক্যে বলেন, “প্রস্তুত আছি।” জানা যাচ্ছে, মূলত তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে অর্পিতাকে ১৬৪ ধারায় গোপন জবানবন্দি দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করেছে ইডি।

এই তিনটি বিষয় কী? প্রথমত, অর্পিতা তাঁর বয়ানে জানিয়েছেন, যে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, সোনাদানা এবং সম্পত্তি উদ্ধার হয়েছে তা কোনও কাজের মাধ্যমে উপার্জিত নয়।শুধুমাত্র ঘনিষ্ঠতার কারণেই তাঁকে এই টাকা ও সোনা-দানা দিয়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি, তাঁর অবর্তমানে যে তাঁর নামে থাকা দুই ফ্ল্যাটে পার্থের লোকজনই এই বিপুল টাকা ও সোনা রেখেছেন সেটাও অর্পিতার মুখ থেকে বিচারকের কাছে জবানবন্দিতে নথিভুক্ত করতে চায় ইডি।

দ্বিতীয়ত, পার্থের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্র ধরে গত কয়েক বছরে তিনি কার কার সঙ্গে টাকা লেনদেন নিয়ে কথা বলতে শুনেছেন, সেই তালিকাও জানতে চায় ইডি।  বিভিন্ন জেলা থেকে যে টাকার জোগান আসত, সেই টাকা কারা পাঠাতেন, সেই ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানাও অর্পিতার জবানবন্দিতে রেকর্ডে রাখতে চান কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা।

তৃতীয়ত, গত কয়েকদিন টানা জেরা করে এই নিয়োগ দুর্নীতিতে বেশ কয়েকজন রাঘব বোয়ালের নাম উঠে এসেছে অর্পিতার মুখ থেকে৷ জেলা থেকে আসা টাকার জোগান পার্থের কাছে আসার পর কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তির কাছে তা পৌঁছত, তাও ১৬৪ ধারায় গোপন স্বীকারোক্তিতে রেকর্ড করাতে চাইছেন ইডি-র তদন্তকারী অফিসাররা।