কলকাতা: অতীতেও বহু ঝড়-ঝাপটা সয়েছে এই বাগান৷ তবে উম্পুনের মতো দাপট দেখায়নি কেউ৷ এই ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত বটানিক্যাল গার্ডেন৷ শুক্রবার শিবপুর বোটানিক্যাল গার্ডেনের হালহকিকত খতিয়ে দেখলেন পাঁচ সদস্যের একটি টিম৷ সমীক্ষার রিপোর্ট পাঠানো হল প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী সহ আরও কিছু সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিত্বকে৷
শিবপুর এজেসি বোস রোডের বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রসঙ্গ উঠলেই অবধারিতভাবেই চলে আসে বিখ্যাত 'দ্য গ্রেট বানিয়ন ট্রি'র কথা। গার্ডেনের অন্যতম আকর্ষণও ছিল এই গাছ৷ কিন্তু উম্পুনে বেসামাল বুড়ো বট৷ এদিন ঐতিহাসিক বাগান ঘুরে দেখেন বোটানিক্যাল গার্ডেন রোড ডেইলি ওয়াকার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সমরজিৎ মন্ডল, সম্পাদক তাপস দাস, সহ-সম্পাদক রাকেশ মাল্লু এবং পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের বিশিষ্ট সদস্য রূপম চৌধুরী এ আরিয়ন্ট মাল্লুকে নিয়ে গঠিত পাঁচ সদস্যের বিশেষ টিম৷ প্রায় তিনঘন্টা ধরে বাগানের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে দেখেন তাঁরা৷ ঐতিহাসিক বানিয়ান ট্রি (আনুমানিক ৩০০ বছরের পুরনো বট গাছ), ম্যাড ট্রি, আফ্রিকান বাওয়া, মেহগিনি বাগান, তালবাগান, সুগন্ধি বাগান, লার্জ পাম হাউস সহ বাগানের প্রায় সমস্ত গাছ পর্যবেক্ষণ করে দেখেন।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় উম্পুনে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বাগান৷ দা গ্রেট বানিয়ান ট্রি ২০ থেকে ২৫ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বিশেষজ্ঞ টিমের মতে ম্যাড ট্রি, আফ্রিকান বাওয়া ট্রিকেও বাঁচানো যাবে না৷ ছোট ছোট বহু গাছ হেলে পড়েছে৷ তবে এগুলিকে রক্ষা করা সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে। এরকম ছোট গাছের সংখ্যা আনুমানিক কয়েক শত। তাঁদের মতে, বড় গাছগুলিকে আধুনিক বৈজ্ঞানিক চিন্তাভাবনার সাহায্য নিয়ে রক্ষা করা যেতে পারে।
প্রায় ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে৷ এখনও বাগানের মূল রাস্তা, লেক ও ছোট সংযোগ রক্ষাকারী রাস্তা পরিষ্কার করা সম্ভব হয়নি৷ উপড়ে পড়েছে গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি৷ রাস্তার উপরেই ছিড়ে পড়েছে তার৷ শুক্রবার বাগানের প্রতিটি অংশ সরেজমিনে খতিয়ে দেখার পর এই টিম গার্ডেনের মূল অফিসে যায়। সেখানে পরিদর্শক দলের পক্ষ থেকে সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে কিউরেটরের হাতে স্মারক লিপি দেওয়া জমা দেওয়া হয়৷ এই বিষয়ে জয়েন্ট ডিরেক্টরকে অবহিত করা হয়েছে। একই কপি ই-মেল মারফত পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, পরিবেশ মন্ত্রী, হাওড়ার জেলাশাসক এবং এসপি-কে৷
ঐতিহাসিক বটানিক্যাল গার্ডেনকে বাঁচানোর জন্য কমিটির পক্ষ থেকে হাওড়ার সর্বস্তরের মানুষের কাছে সাহায্য, সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়ার জন্য আবেদন করা হয়েছে। সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের কাছে পরিবেশপ্রেমী ও অ্যাসোসিয়েশনের বিশিষ্ট সদস্য রূপম চৌধুরীর আবেদন, ‘‘আসুন আমরা বুক দিয়ে বটানিক্যাল গার্ডেনকে বাচাই৷’’