কলকাতা: ২০ দিন পরেই ছিল জন্মদিন। বাবা-মার সঙ্গে প্রিন্সেপ ঘাট, মিলেনিয়াম পার্ক যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু একটা লরির ধাক্কায় সব শেষ। বেহালা দুর্ঘটনায় মৃত দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র সৌরনীল সরকারের কলকাতার নদীর পাড় যাওয়ার স্বপ্ন অধরাই থেকে গেল। ছেলের অকাল মৃত্যুতে এই মুহূর্তে বাকরুদ্ধ মা, হাসপাতালে বিছানায় শোয়া বাবা যেন অসাড় হয়ে আছেন। সৌরনীলের প্রতিবেশীরাও বিশ্বাস করতে পারছেন না এমন ঘটনা ঘটে গিয়েছে। তাদের সকলের খুব প্রিয় ছিল ছোট্ট ছেলেটি।
বেহালা চৌরাস্তার বড়িশা হাই স্কুলের ছাত্র সৌরনীল বাবার সঙ্গেই রোজ স্কুলে আসত। হরিদেবপুর থানা এলাকা নিবাসী সরোজ সরকারের ঠাকুরপুকুরে মুদি দোকান রয়েছে। সেখান থেকেই স্কুলে আসছিলেন তারা। চৌরাস্তা নেমে রাস্তা পার হওয়ার সময়ই ঘটে গেল ঘটনাটি। চাকায় পিষে গেল ৭ বছরের পড়ুয়া। গুরুতর আহত হয়ে বাবা হাসপাতালে। এক লহমায় উতাল-পাতাল হয়ে গেল একাধিক জীবন। ছেলের ব্যাগ ধরে মা কেঁদে চলেছেন অবিরাম। তাঁকে থামানো যাচ্ছে না। অবশ্য যারা থামানোর চেষ্টা করছেন তাদের চোখ দিয়েও অনবরত গড়িয়ে পড়ছে জল। ছোট্ট ছেলেটা যে আর কোনও দিন ফিরবে না বাড়িতে তা কেউই মানতে পারছেন না।
কলকাতা পুলিশের ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচির মধ্যে কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে ফোন করে তা ইতিমধ্যেই জানতে চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দুর্ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিন সকাল থেকেই অগ্নিগর্ভ বেহালার চৌরাস্তা। মৃতদেহ রাস্তায় রেখেই বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়রা৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস৷ পাল্টা পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা৷