কলকাতা: স্কুল যেতে ভালবাসত সে। আর শুক্রবার পরীক্ষা থাকায় তো স্কুল যেতেই হত। বাড়ি থেকে বেরনোর আগে ‘ট্র্যাফিক সিগন্যাল’ শব্দের বানানটা জেনেছিল মায়ের থেকে। আর বেহালার চৌরাস্তায় নেমে সেই সিগন্যালেই সব শেষ। ছোট্ট সৌরনীল সরকারের আর পরীক্ষা দেওয়া হল না, বাড়িও আর ফিরবে না সে কোনও দিন। হাসপাতালে প্রায় অচৈতন্য অবস্থায় বসে থাকা তাঁর মা এখনও সেই স্কুল ব্যাগ আঁকড়ে।
সৌরনীল এতটাই স্কুল যেতে পছন্দ করত যে রবিবারও স্কুল যেতে চাইত। প্রতিদিন বাবার সঙ্গে সাইকেল করে বেহালার জেমস লঙ সরণী দিয়ে স্কুলে পৌঁছত সে। তবে শুক্রবার তেমনটা হয়নি। সাইকেল খারাপ হয়ে যাওয়ায় অটো করে চৌরাস্তায় নেমেছিল তারা। স্কুলে ঢোকার ঠিক আগেই এই দুর্ঘটনা। এক পলকে সব শেষ করে দিয়েছে ওই ট্রাক। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরনোর আগে ট্রাফিক সিগন্যাল বানানটাই বা জেনেছিল কেন সৌরনীল? স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, শুক্রবার মানসিক ও শারীরিক সমন্বয় সাধনের একটি বিষয়ে পরীক্ষা ছিল। ট্র্যাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থা এবং কী ভাবে রাস্তা পারাপার করতে হয়, তার নিয়মকানুন ছিল পড়ার অংশে। তাই হয়তো এই বানান জেনেছিল সে।
কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে ফোন করে তা ইতিমধ্যেই জেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই দুর্ঘটনায় কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। গতকাল সকাল থেকেই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে বেহালার চৌরাস্তা। মৃতদেহ রাস্তায় রেখেই বিক্ষোভ শুরু করেন স্থানীয়রা৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ৷ ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস৷ পাল্টা পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা৷