কাশির শব্দেই চিহ্নিত হবে করোনা, নয়া যন্ত্র আবিষ্কার যাদবপুরের ২ পড়ুয়ার

কাশির শব্দেই চিহ্নিত হবে করোনা, নয়া যন্ত্র আবিষ্কার যাদবপুরের ২ পড়ুয়ার

কলকাতা:  করোনায় বেসামাল পরিস্থিতির মধ্যেই কম দামের ভেন্টিলেটর বানিয়ে তাক লাগিয়েছিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই পড়ুয়া। সেই সঙ্গে আরও একবার সেরার শিরোপা ছিনিয়ে বিশ্বমঞ্চে প্রশংসিত হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়৷ ফের এক অনন্য ডিভাইস তৈরি করে তাক লাগালেন  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেক্ট্রনিকস অ্যান্ড টেলিকমিউনিকেশনস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৃতীয় বর্ষের দুই পড়ুয়া অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচল নিলহানি৷

এবার একটি বিশেষ যন্ত্র তৈরি করে সকলকে চমকে দিয়েছেন অন্বেষা এবং অচল৷ এই বিশেষ বিভাইজ সম্পর্কে অন্বেষা বলেন, আমি এবং অচল দু’জনে মিলে একটি বিশেষ সাউন্ড সেন্সিং ডিভাইজ আবিষ্কার করেছি৷ যে যন্ত্রটি কাশির শব্দ শুনে বলে দেবে এটি স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক৷ অডিও-ভিজুয়াল ফিডব্যাক যুক্ত এই ডিভাইজ সহজেই সনাক্ত করতে পারবে কোভিড-১৯ পজেটিভ ব্যক্তিকে৷ এটি একটি স্বতন্ত্র এবং অনন্য ডিভাইজ৷ এটি শুধু কোয়ারেন্টিন সেন্টার নয়, অফিস, ক্লাসরুম, কমিউনিটি সেন্টারগুলির উপর ক্রমাগত নজরদারি চালাতে এই ডিভাইজ ব্যবহার করা যেতে পারে৷ কশির শব্দ শুনেই কোভিড রোগীকে চিহ্নিত করবে এই বিশেষ যন্ত্র৷ এই ডিভাইজটি আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃতি লাভ করেছে বলেও জানান অন্বেষা৷

তিনি বলেন, সমাজ এবং দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াতে এমনই এক যন্ত্র তৈরি করতে চেয়েছিলাম আমরা৷ যা বহু মানুষের কাজে আসবে৷ আন্তর্জাতিক ওয়েব সেমিনারে এই বিষয়টি নিয়ে আমরা কথা বলব৷ যাতে সারা বিশ্বের মানুষ এই ইউনিক ডাভাইজ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে পারে৷  তাঁদের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত গোটা বিশ্ববিদ্যালয়৷

এর আগে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন অন্বেষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অচল নিলহানি৷ প্রতিযোগিতায় তাঁদের তৈরি ভেন্টিলেটরের মডেল গৃহীত হয় এবং এই বিভাগে জয়ী হন তাঁরা৷ গবেষক, বিজ্ঞানী এবং পড়ুয়া মিলিয়ে মোট ৮৪ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন ওই প্রতিযোগিতায়। এই ৮৪ জন প্রতিযোগীকে নিয়ে ছোট ছোট দল তৈরি করা হয়। অন্বেষা এবং অচলের দলে ছিলেন আরও তিনজন। তবে তাঁরা ছিলেন অন্য দায়িত্বে৷ মূলত ভেন্টিলেটর তৈরির কাজ করেছেন এই দুই পড়ুয়া৷ মার্চের শেষে অনলাইনেই প্রেজেন্টেশন জমা দেন তাঁরা। মোট ১৪টি প্রস্তাব জমা পড়েছিল। সেখান থেকে অন্বেষাদের তৈরি ভেন্টিলেটরের মডেলটি বেছে নেন উদ্যোক্তাদের। তাঁদের মতে, এই মডেল বাকি ভেন্টিলেটরের থেকে অনেক বেশি নিখুঁত৷

পাটনা থেকে বিহারে যাদবপুরে পড়তে আসা অচল জানান, এই ভেন্টেলেটরের দাম ৩০০ ডলার৷ ভারতীয় মুদ্রায় মাত্র ২১,৬০০ টাকা৷ বর্তমানে আইসিইউতে যে ভেন্টিলেটর ব্যবহার করা হয়, তার দাম প্রায় ৫ লক্ষ থেকে ১০ লক্ষ টাকা৷ এই প্রতিযোগিতায় বিজয়ী প্রতিটি দলের হাতে পুরস্কার হিসাবে ১ হাজার মার্কিন ডলার তুলে দেন এই ইভেন্টের সহযোগী স্পনসর চান জুকারবার্গ বায়োহাব৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 13 =