‘আমার সংসার ভেঙেছে তৃণমূল, ওদের সরকার ভাঙব!’ ঘাসফুলে যোগ দিতেই স্ত্রীকে বিচ্ছেদ সৌমিত্রর

‘আমার সংসার ভেঙেছে তৃণমূল, ওদের সরকার ভাঙব!’ ঘাসফুলে যোগ দিতেই স্ত্রীকে বিচ্ছেদ সৌমিত্রর

কলকাতা:  তৃণমূল ছেড়ে একের পর এক নেতা যখন বিজেপি’তে যোগ দিচ্ছেন, ঠিক সেই সময়ই ধাক্কা এল বিজোপি’র ঘরে৷ সোমবার বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী সুজাতা মণ্ডল খাঁ যোগ দিলেন তৃণমূল শিবিরে।  এর পরেই অবশ্য সুজাতা মণ্ডল খাঁকে বিবাহ বিচ্ছেদের নোটিশ পাঠান সৌমিত্র৷ এর পরেই সাংবাদিক বৈঠকে এসে আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন বিজেপি যুব মোর্চার সভাপতি৷ 

আরও পড়ুন-  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই আমাদের অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ: সুজাতা

বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘রাজনীতির উর্ধে একটা ভালোবাসার সম্পর্ক থাকে৷ দশ বছরের সম্পর্ক এভাবে রাজনীতির সঙ্গে শেষ হবে, সেটা জানা ছিল না৷ তবে ওঁর সিদ্ধান্তে বাধা দেব না৷ এই দশবছরে অনেক ঝড় এসেছে৷ বিপদের দিনে একে অপরের পাশে থাকাটাই ধর্ম৷ কিন্তু সেখানে রাজনীতি চলে আসবে সেটা কল্পনা করিনি৷’’  সৌমিত্র খাঁ বলেন, ‘‘অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কাজের বিরোধিতা করে মানুষের স্বার্থে একদিন তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছিলাম৷ পশ্চিমবঙ্গকে যে ভাবে চোরের রাজ্যে পরিণত করা হয়েছে, তারই বিরোধিতা করেছিলাম৷ দু’ বছর আগে যখন বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম, তখন কৈলাস দা, মুকুল দা, দিলীপ দা পাশে ছিলেন৷ কিন্তু সকলেই পাশে ছিল না৷ সেই সময় সুজাতা আমার পাশে ছিল৷ সে কথা অস্বীকার করব না৷’’ তবে বিজেপি’র জন্যই আজ তিনি এখানে পৌঁছতে পেরেছেন৷ তাঁর কথায়, ‘‘দল আমাকে বিশ্বাস করে বড় জায়গা দিয়েছে৷ বাংলার যুব সমাজের জন্য লড়াই করার জায়গা দিয়েছে৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ব৷’’ 

তৃণমূলের অপশাসনের কথা তুলে সৌমিত্র বলেন, তৃণমূলে থাকার সময় আমার নামে একটা মামলা ছিল না৷ আজকে ৩৬ টি মামলা রয়েছে৷ এই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য চাকরি হারাতে হয়েছিল সুজাতাকে৷ কিন্তু মাসের ১ তারিখে ৭০ হাজার টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিতাম৷ যাতে ওঁর কষ্ট না হয়৷ রাজনীতির চক্রে পড়ে নিজের উচ্চাভিলাষা পূরণ করার জন্য এই পদক্ষেপ করেছে সুজাতা৷ তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন রাজনীতি করেও দোতলা বাড়ি করতে পারিনি৷ কিন্তু সুজাতার যাতে কোনও অসুবিধা না হয় জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি৷ 

আরও পড়ুন- কেন ছাড়লেন বিজেপি? তৃণমূলে আসার কারণ ব্যাখ্যা করলেন সুজাতা

অভিমানের সুরেই সুজাতার উদ্দেশে সৌমিত্র বলেন, “আমার লড়াই তোমার বিরুদ্ধে নয়, তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। আমার সম্পত্তির কোনও অংশ চাইলে ৭ দিনের মধ্যে তা দিয়ে দেব। তুমি তোমার উকিল নিয়ে আসবে। তবে একটাই অনুরোধ দয়া করে খাঁ পদবিটা ছেড়ে দিও। আর ডিভোর্স নোটিসে সাইন করে দিও।” তবে গত তিন চার মাস ধরে তাঁদের মধ্যে অশান্তি হচ্ছিল বলেও স্বীকার করে নেন সৌমিত্র খাঁ৷ 

তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসকে না সরানো পর্যন্ত লড়াই করার সময় চেয়েছিলাম৷ এক সময় তিন মাস প্রকাশ্যে আসতে পারিনি৷ সেই সময় সুজাতা আমার হয়ে লড়াই করেছিল৷ তবে ভারতীয় জনতা পার্টি না থাকলে ১০ হাজার ভোটও সুজাতা যোগ করতে পারত না৷ আর সৌমিত্র খাঁ-র স্ত্রী না হলে তোমাকে কেউ চিনত না৷’’ তিনি বলেন, ‘‘যে সিদ্ধান্ত নিয়েছ, ভালো৷ তোমার রাজনৈতিক জীবনের উন্নতি কামনা করি৷ 

তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, ‘‘একজন গৃহবধূর সংসার ভেঙে আপনারা রাজনীতি করলেন? লজ্জা করল না? পরিবার ভাঙুন ক্ষতি নেই৷ দল যদি আমাকে দায়িত্বে নাও রাখে, আমি ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সৈনিক হয়ে কাজ করব৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে লড়ব৷  
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − 11 =